দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে কাজ করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ধারাবাহিকতা না থাকলে বাংলাদেশে এমন উন্নয়ন সম্ভব হতো না।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনের উত্তর প্লাজায় কর্মকর্তাদের জন্য নবনির্মিত কার্যালয় উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবাই আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন বাংলাদেশে যেন গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত থাকে। দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আজ আমরা বাংলাদেশকে উন্নত করতে পেরেছি। এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদাও পেয়েছি। যদি একটা স্থিতিশীল ধারাবাহিকতা না থাকতো তাহলে এটা কখনও অর্জন করা সম্ভব হতো না।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এ গণতান্ত্রিক ধারাটা কিন্তু দীর্ঘ সংগ্রামের ফসল, এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। এটা একদিনে আসেনি। বার বারই আমাদের দেশে নানা রকম সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
‘কিন্তু সেই ২০০৯ এ সরকার গঠনের পর থেকে আমরা যে একটানা সরকারে থাকতে পেরেছি, পাশাপাশি আমাদের গণতান্ত্রিক ধারাটা মজবুত করতে পেরেছি বলেই কিন্তু আজ পার্লামেন্ট ভবন না সারাদেশটাই বদলে গেছে।’
উদ্বোধনের পরেই পুরো সংসদ সচিবালয় নতুন ভবনে কাজ শুরু করার প্রস্তুতি গুছিয়ে রেখেছে। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর নেতৃত্বে তারাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নতুন ভবন ঘুরিয়ে দেখান।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেয়ার পর সংসদের জরাজীর্ণ অবস্থা নজরে আসে। দেয়াল থেকে ছাদ সব সংস্কার করতে হয়েছে। আর তার অনেকখানি কৃতিত্ব দেন চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরি লিটনকে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটার (নতুন কার্যালয়) একটা ভাল ব্যবহার হবে। দেশের কাজে লাগবে। গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত থাকবে।’
সংস্কার কাজ ও নতুন নির্মাণে সংসদ ভবনের স্থপতি লুই আই কানের নকশাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এজন্য পেনসেলভিনিয়া থেকে সরকারি উদ্যোগে পূর্ণাঙ্গ নকশা আনতে হয়। সংসদ ভবনকে বিশেষ স্থাপত্য হিসাবে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী ।
তিনি বলেন, সংসদের ভেতরে আমরা যখন বসি তখন মেঘ ডাকার আওয়াজ শুনতে পাই। আবার রোদ এসে পড়ে। প্রকৃতির সঙ্গে বসবাস-এটাই ছিল লুই কানের নকশার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক। সেটা সংরক্ষণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
নতুন ভবনে মুজিব আর্কাইভ আর একটি অংশ জুড়ে সংসদ সংসদ গ্রন্থাগার। একে অমূল্য সংগ্রহশালা হিসাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল গ্রন্থাগার করার তাগিদ দেন। এসময় সংসদ সদস্যদের বই পড়া ও জানাকে দায়িত্ব পালনের অংশ হিসাবে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মাননীয় সংসদ সদস্যরা যদি মাঝেমধ্যে সংসদে বসেন আর বই পড়েন! আমরা যখন এসেছি, তখন পড়েছি। সেখান থেকে অনেক কিছু জেনেছি।’
লুই আই কান সংসদ ভবনে নয়টি পৃথক ব্লক দিয়ে অষ্টভুজে নকশা এঁকেছেন। মাঝের অষ্টভুজ ব্লকটির উচ্চতা ১৫৫ ফুট এবং বাকি আটটি ব্লকের উচ্চতা ১১০ ফুট। করিডোর, লিফট, সিঁড়ি ও বৃত্তসহ নানা পদের নকশায় যে অসাধারণ স্থাপনা ফুটিয়েছেন তার সাথে যোগ হলো নতুন সংসদ সচিবালয় ভবন।
অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরীসহ মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইফ, হুইফ ও সংসদ সদস্যরা।