যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার মধ্যেও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ৮৮ জন নিহত হয়েছেন। এর ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান এই হামলায় নিহতের মোট সংখ্যা ৪৫ হাজার ৮০৫ জনে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে এই ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিরলস এই হামলায় আরও অন্তত এক লাখ ৯ হাজার ৬৪ জন আহত হয়েছেন। গতকাল রবিবার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
এদিকে আল জাজিরা জানিয়েছে, রবিবার রাফা, নাবলুস ও দেইর আল বালাহ এলাকায় হামলা চালায় ইসরাইলি সেনারা। নাবলুসে দোকানপাট বন্ধ করে সামরিক চেক পয়েন্ট বসিয়েছে তারা।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে ৮৮ জন নিহত এবং আরও ২০৮ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। কারণ, উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন বলে ধারণা করছেন ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
এদিকে বন্দীদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে হামাসের সঙ্গে কাতারের দোহায় আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে হামাস জানায়, ইসরাইলের উপস্থাপিত ৩৪ বন্দীর একটি তালিকা অনুমোদন করেছে তারা। যা সম্ভাব্য চুক্তিতে বিনিময়ের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। এ বিষয়ে ইসরাইলের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি বলে জানায় হামাস।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকেই ইসরাইল গাজা উপত্যকায় আকাশ ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এই আক্রমণে হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। গাজায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ইসরাইলের আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের চরম সংকটে থাকা গাজাবাসীরা বর্তমানে চরম মানবিক সংকটে ভুগছেন। অবরুদ্ধ এই অঞ্চলের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ইতোমধ্যেই ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।