গ্যাস সংকটে বিপাকে পড়েছে সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ের শিল্প কারখানাগুলো। প্রায় সব কারখানার উৎপাদন নেমে এসেছে অর্ধেকের নিচে। এতে বড় ধরনের লোকসানের শঙ্কা করছেন মালিকরা। অবশ্য তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্রুত এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে শিল্প কারখানা রয়েছে এক হাজার ৭৯২টি। এর প্রত্যেকটিতেই রয়েছে গ্যাস সংযোগ। কিন্তু চলমান গ্যাস সংকটে বিপাকে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
কর্মকর্তারা বলছেন, এ ক’দিনে প্রায় সব কারখানার উৎপাদন নেমে এসেছে অর্ধেকের নিচে। এ অবস্থায় উৎপাদন ও রপ্তানি নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন।
সাভার শামস ওয়াশিং লিমিটেডের রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলী রাশেদুল সিকদার বলেন, গ্যাস কম থাকায় আমাদের প্রোডাকশন অনেক কমেছে। ঠিকমতো মেশিন চালানো যাচ্ছে না গ্যাস সংকটের কারণে। ৪০ শতাংশ পর্যন্ত প্রোডাকশন কমেছে।
কারখানা মালিকরা বলছেন, যে প্রতিষ্ঠানগুলো গ্যাস নির্ভর, সেখানে গ্যাসের চাপ একেবারে কম। এতে উৎপাদন কমে গেছে। আর সময় মতো অর্ডারগুলো দিতে না পারলে, বিদেশি ক্রেতা হারানোর শঙ্কা করছেন তারা। সংকট কাটাতে সরকারের নীতি নির্ধারক পর্যায়ে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
শামস ওয়াশিং লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার হারুনুর রশিদ জানান, কর্মচারীদের বেতন বাড়িয়ে গ্যাস সংকটে উৎপাদন কমায় তারা ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
এ বিষয়ে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বলছে, চাহিদার তুলনায় গ্যাস সরবরাহ কম। তাই সমস্যা প্রকট হচ্ছে। আর এটা এখন জাতীয় সংকট, তাই দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে। সাভার ও আশুলিয়ায় প্রতিদিন গ্যাসের চাহিদা ২৬০ মিলিয়ন ঘনফুট, আর বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে ১৬০ মিলিয়ন ঘনফুট।
দেশের প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২৬ শতাংশদেশের প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২৬ শতাংশ
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের ডিজিএম প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মোহাম্মদ সায়েম বলেন, আমাদের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি।
কারখানা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করে উৎপাদন বাড়াতে না পারলে, এর খারাপ প্রভাব পড়বে সারাদেশের অর্থনীতিতে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, দেশে বর্তমানে দৈনিক ৪১০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। চাহিদা মোতাবেক গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না এক দশকের বেশি সময় ধরে।
তবে ৩৫০-৬০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা গেলে পরিস্থিতি মোটামুটি সামলে নেওয়া যায়। কিন্তু বর্তমানে দৈনিক ২৫০-২৬০ কোটি ঘনফুট বিতরণ করা হচ্ছে। আর্থিক সংস্থানের অভাবে চলতি বছরে স্থানীয় গ্যাস উৎপাদন এবং বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি বাড়িয়ে সরবরাহের পরিমাণ ৩১০-১৫ কোটি ঘনফুটের বেশি করা কঠিন।