সালাহউদ্দিন আহমেদ: পাহাড়ে অভিন্ন স্বার্থ ভারত-আমেরিকার, খ্রিস্টান রাষ্ট্রের আশঙ্কা।বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এখন শুধু ভৌগোলিকভাবে নয়, বরং ভূ-রাজনৈতিক কারণে আন্তর্জাতিক মহলের নজরে। এখানে ভারত ও আমেরিকার স্বার্থ অভিন্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারত- আমেরিকার প্রত্যক্ষ মদদে ইউপিডিএফসহ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো সক্রিয় রয়েছে। অন্যদিকে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো, বিশেষ করে আমেরিকা, করিডোর, বন্দর এবং আরাকানের বিরল খনিজ সম্পদ দখলে নিতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে।
দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নিরাপত্তা ও যোগাযোগ সুবিধার অজুহাতে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদ দেওয়া হচ্ছে। ইউপিডিএফসহ কয়েকটি গ্রুপ খোলাখুলি বাংলাদেশ থেকে পার্বত্য অঞ্চল আলাদা করার ষড়যন্ত্র করছে।
পশ্চিমা স্বার্থ ও খ্রিস্টান মিশনারিদের তৎপরতা
পাহাড়ে পশ্চিমা মিশনারিদের কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে বিস্তৃত। এর ফলে স্থানীয় জনসংখ্যার মধ্যে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক এলাকায় মুসলমানরা সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে। খ্রিস্টান মিশনারিরা নানা আন্তর্জাতিক সহায়তা পাচ্ছে।মুসলমান ও বাঙালিদের জন্য পাহাড়ে সবচেয়ে বড় অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের পরিচয়।সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিকভাবে মুসলমানরা নানা বাধা ও বৈষম্যের মুখে পড়ছে।
এই পরিস্থিতি পূর্ব তিমুরের পুনরাবৃত্তির দিকে নিয়ে যেতে পারে যেখানে খ্রিস্টান মিশনারি তৎপরতা, পশ্চিমা সমর্থন ও রাজনৈতিক দুর্বলতা মিলিয়ে একটি নতুন খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠিত হয়েছিল।
খাগড়াছড়ির ঘটনা টিপ অব দ্য আইসবার্গ
সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনা আসলে সামগ্রিক চিত্রের ক্ষুদ্র অংশ মাত্র। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিচ্ছিন্নতাবাদীরা পাহাড়জুড়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র মজুদ করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
সরকারের অবস্থান ও নীতি দুর্বলতা
আমেরিকার আগ্রহ: যুক্তরাষ্ট্রের চোখ এখানে করিডোর, বন্দর এবং আরাকানের বিরল খনিজ সম্পদের ওপর। ফলে তারা সরাসরি না হলেও, বিভিন্ন পথে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। সরকার ইতিমধ্যেই পশ্চিমাদের কাছে কিছুটা নতি স্বীকার করেছে। করিডোর, বন্দর ব্যবহার এবং খনিজ সম্পদে পশ্চিমা শক্তিগুলোর অংশীদারিত্ব দেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়েছে এর ফলে পাহাড়ে সরকারের উপস্থিতি কার্যকর হলেও, নীতিগত শক্তি কমে যাচ্ছে।
– সম্ভাব্য চিত্র একটি নতুন খ্রিস্টান রাষ্ট্র বর্তমান অবস্থা অব্যাহত থাকলে পার্বত্য অঞ্চল একটি নতুন খ্রিস্টান রাষ্ট্রে রূপ নেওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। ভারতের মদদ, আমেরিকার কৌশলগত স্বার্থ, পশ্চিমা মিশনারি প্রভাব, এবং সরকারের দুর্বল নীতি এসব মিলেই এই আশঙ্কাকে আরও প্রকট করছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম কেবল একটি পাহাড়ি অঞ্চল নয়, বরং জাতির অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্ন। খ্রিস্টান মিশনারি তৎপরতা ও বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে প্রতিহত করতে হলে সরকারের এখনই একটি প্রপার স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করা জরুরি। নইলে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব ভয়াবহ ঝুঁকির মুখে পড়বে।
২৩৮টি সেনা ক্যাম্প পুনঃস্থাপনের করা জরুরী।
পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পুনরায় সেনা মোতায়েনের দাবি উঠেছে। বিশেষ করে অতীতে প্রত্যাহার করা সেনাবাহিনীর ২৩৮টি ক্যাম্প অবিলম্বে পুনঃস্থাপন করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
স্থানীয়দের মতে, দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ে অশান্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি, নাশকতা ও সহিংসতায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কে দিনযাপন করছে। সেনা ক্যাম্পগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়েছে।
ক্যাম্পগুলো পুনঃস্থাপনের পক্ষে মতদাতারা বলছেন, স্থায়ী সেনা উপস্থিতি ছাড়া শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। এই ক্যাম্পগুলো পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দমন, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং সামগ্রিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা যাবে।


















