শনিবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. London Mirror Specials
  2. অন্যান্য
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খুলনা
  6. খেলা
  7. চট্রগ্রাম
  8. জেলার খবর
  9. ঢাকা
  10. তথ্য-প্রযুক্তি
  11. প্রবাসের কথা
  12. বরিশাল
  13. বাংলাদেশ
  14. বিনোদন
  15. ব্যাবসা-বাণিজ্য

‘জনআস্থা অর্জনই নতুন কমিশনের বড় চ্যালেঞ্জ’

প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২ ৫:৫৮ অপরাহ্ণ

দেশবাসীর নজর এখন অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটির দিকে। সরকারের গঠিত এই কমিটিই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে কাজ করছে। একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও চারজন নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ দিতে রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ জনের নাম সুপারিশ করবে তারা। সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি বাছাই করে পাঁচজনকে নিয়োগ দেবেন। রাষ্ট্রপতির নিয়োগকৃত এই কমিশনই ২০২৩ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ পাঁচ বছরের নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

সাম্প্রতিক কমিশনগুলোর কর্মকাণ্ডের কারণে নির্বাচন আয়োজনের এই প্রতিষ্ঠান নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের আলাপ উঠেছে। সমালোচকরা কমিশনগুলোকে পক্ষপাতদুষ্ট বলেও অভিযুক্ত করেছেন। এমনকি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে তাদের সক্ষমতাও বারবার হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ।

 ৩২২ জনের মধ্য থেকে ১০ জনের তালিকা করা খুব কঠিন হবে বলে মনে করি না। কারণ এই তালিকার বেশিরভাগই স্ব স্ব জায়গায় সক্ষমতা এবং সফলতার সাক্ষর রেখেছেন 

এই আলাপ-আলোচনার মধ্যে নতুন কমিশন গঠিত হলে তাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ কী হবে, প্রধান কাজ কী হবে—সে বিষয়ে মতামত চেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এবং সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের। রাষ্ট্রপতির কাছে নাম সুপারিশের জন্য মতামত চেয়ে সার্চ কমিটি দফায় দফায় যে সুধীজনদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে, সেখানে এই তিনজনও অংশ নিয়েছিলেন।

অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘মানুষ আসলে কোনোভাবেই পেছনে হাঁটতে চায় না। সামনে চলাই তার লক্ষ্য। একটি জাতি গঠনেও এমন লক্ষ্য নিয়েই এগোতে হয়। রাজনীতি ও গণতন্ত্র সুসংহত না হলে কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা যায় না। আমি মনে করি, এই গুরুত্ব অনুভব করবে আগামীতে গঠিত নতুন নির্বাচন কমিশন। অনেক পুরোনো রাষ্ট্রও গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে পারেনি। রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের পরিচয় পঞ্চাশ বছরের। অর্জন অনেক। আরও বহুদূর যেতে হবে। রাষ্ট্র, সমাজের দায়টা সবাইকেই নিতে হবে।’

এই শিক্ষাবিদ বলেন, ‘গণমাধ্যমের খবরে দেখতে পেলাম কমিশনের জন্য ৩২২ জনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে সার্চ কমিটিতে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন এবং ব্যক্তি এই নামের প্রস্তাব করেছেন। আমাদের নামও দিয়েছেন কেউ কেউ, যদিও সম্মতি না নিয়েই এটি করেছেন। তবে আমি মনে করি, যে কোনো সাংবিধানিক পদের জন্য সম্মতিটা নেওয়া প্রয়োজন। ৩২২ জনের মধ্য থেকে ১০ জনের তালিকা করা খুব কঠিন হবে বলে মনে করি না। কারণ এই তালিকার বেশিরভাগই স্ব স্ব জায়গায় সক্ষমতা এবং সফলতার সাক্ষর রেখেছেন। ১০ জনের মধ্য থেকে মহামান্য রাষ্ট্রপতি পাঁচজনের নাম চূড়ান্ত করবেন। আমি আশা করছি, যে ১০ জনের তালিকা সার্চ কমিটি প্রণয়ন করবে, তারা সবাই কমিশনার হওয়ার যোগ্যতা রাখবেন।’

জনআস্থার প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ভোট, গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই। উন্নত বিশ্বেও এমন প্রশ্ন আছে। তবে সেখানে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি রয়েছে, যা আমাদের এখানে ঘাটতি আছে। আমাদের এখানে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি বলেই হয়তো এত আলোচনা। তবে এর দায় সবার। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন কমিশন গঠন করলেই যে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, তা নয়। কমিশন হলো একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান। রাজনৈতিক দলগুলো স্ব স্ব জায়গা থেকে প্রতিষ্ঠান। সরকার একটি প্রতিষ্ঠান। নির্বাচনের সঙ্গে আরও অনেক প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে একটি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়। তবে প্রধানত দায় হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর। তাদের অংশীদারত্বের মধ্য দিয়েই গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটে। আর নির্বাচন সুষ্ঠু করার মাধ্যমে জনআস্থা ফিরে আসে, যেটি প্রধানত চ্যালেঞ্জ নির্বাচন কমিশনের।’

 প্রধানত দায় হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর। তাদের অংশীদারত্বের মধ্য দিয়েই গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটে। আর নির্বাচন সুষ্ঠু করার মাধ্যমে জনআস্থা ফিরে আসে, যেটি প্রধানত চ্যালেঞ্জ নির্বাচন কমিশনের 

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আলোচনা করে কোনো লাভ হবে না, যদি ব্যক্তি তার জনদায় উপলব্ধি করতে না পারেন। অনেক ভালো মানুষকে সিইসি পদে বসানো হলো, কিন্তু তিনি তার ক্ষমতা এবং দায়িত্ব ভুলে গেলেন, একটি বিশেষ দলের হয়ে কাজ করলেন, তাহলে এসব আলোচনা-পরামর্শের কোনো মূল্য থাকবে না।’

‘জনআস্থা অর্জনই নতুন কমিশনের বড় চ্যালেঞ্জ’

নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির কাছে নাম সুপারিশের জন্য দফায় দফায় বৈঠক করছে সার্চ কমিটি

এই বিশিষ্টজন বলেন, ‘রাজনীতিতে মতপার্থক্য থাকবেই। তা না হলে একটি দলই থাকতো। রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব এখানে বেশি। সরকারি দলের ভূমিকা আগে। তবে মাঠে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। তাদেরও দায়িত্ব আছে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় বসলো না। সার্চ কমিটির সঙ্গেও বসলো না। জনগণ কী চায় তা তো দলগুলোর মধ্যকার আলোচনার মধ্য দিয়ে বের হবে। আলোচনাই হচ্ছে না, তাহলে জনআস্থা মিলবে কীভাবে?’

 মাঠে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। তাদেরও দায়িত্ব আছে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় বসলো না। সার্চ কমিটির সঙ্গেও বসলো না। জনগণ কী চায় তা তো দলগুলোর মধ্যকার আলোচনার মধ্য দিয়ে বের হবে। আলোচনাই হচ্ছে না, তাহলে জনআস্থা মিলবে কীভাবে? 

‘সামনের নির্বাচন কমিশনের ওপর বড় দায়িত্ব আসছে। নির্বাচন, ভোট নিয়ে কী ঘটছে তা বুঝতে হবে। এর পরিণাম কী তা বুঝতে হবে। নইলে সংকট আরও বাড়বে’—বলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

‘জনআস্থা অর্জনই নতুন কমিশনের বড় চ্যালেঞ্জ’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটিতে এই বিশিষ্টজনদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে

বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে গত নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় উল্লেখ করে ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘জনআস্থায় না থেকে কৌশল অবলম্বন করলে কী ঘটে তা আমরা কে এম নূরুল হুদা কমিশনের ব্যর্থতায় দেখতে পেলাম। মানুষ আর এমন ব্যর্থতা দেখতে চায় না। যাদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে তাদের নাম এবং প্রস্তাবকারীর নাম প্রকাশ করতে হবে আগে। তাহলে বোঝা যাবে কমিশন গঠন সুষ্ঠু হচ্ছে কি না।’

তিনি বলেন, ‘উৎসব-আনন্দের পরিবর্তে ভোট-নির্বাচন এখন আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনআস্থা তলানিতে ঠেকছে। মানুষ আর নির্বাচন কমিশনকে বিশ্বাস করে না। একটি গণতান্ত্রিক সমাজের চিত্র তো এটি হতে পারে না। এ অবস্থা থেকে মানুষ রেহাই চাইছে। চাপা ক্ষোভ সর্বত্রই। হয়তো ভয়ে বলতে পারছে না।’

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক