রাজধানীতে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার, রাত পৌনে আটটার দিকে রাজধানীর বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার এই ঘটনা ঘটে। ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক, জনতা’ ব্যানারে জাতীয় পার্টির কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার কিছুক্ষণ পর জাপা অফিসে আগুন দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত সাতটার দিকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ধাওয়া দেন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। কিছুক্ষণ পরেই শিক্ষার্থীরা একজোট হয়ে জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় এবং আগুন দেয়।
এর আগে, সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে ‘পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসর জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক অপতৎপরতা ও দেশবিরোধী চক্রান্তের’ প্রতিবাদে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র শ্রমিক জনতা’ ব্যানারে মশাল মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।
সন্ধ্যায় ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ একটি ফেসবুক পোস্ট দেন। যেখানে তিনি অভিযোগ করেন, জাতীয় পার্টির লোকজন তাদের কর্মীদের পিটিয়েছে। তাই তাদের নিশ্চিহ্ন করার ঘোষণা দেন তিনি। আরেক পোস্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে বিজয়নগরের জাতীয় পার্টি কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার ঘোষণাও দেন।
এর পরপরই ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে মশাল মিছিল কর্মসূচির ঘোষণা দেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। সেই মিছিলটি শাহবাগ হয়ে বিজয়নগরে যায়।
মিছিলটি জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে যাওয়ার পর সেখানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে আগুন দেওয়া হয়। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত ৯টা) বিজয় নগর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। সেখানে পুলিশের কোন উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যায়নি।
দু’পক্ষই দাবি করেছে, তাদের ওপর আগে হামলা হয়েছে। জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক বলেছেন, সন্ধ্যার পরে শাহবাগ থেকে একটি মশাল নিয়ে একদল লোক কার্যালয়ে হামলা করে। কর্মীদের প্রতিরোধে হামলাকারীরা মার খেয়ে পালিয়ে যায়। আধা ঘণ্টা পর সংঘবদ্ধ হয়ে ফিরে তারা কার্যালয় আগুন দেয়।
তিনি আরও বলেন, আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস এসেছিল। তাদের আগুন নেভাতে দেওয়া হয়নি। এভাবে যদি একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে হামলা হয়, তাহলে দেশে কীসের গণতন্ত্র, কীসের রাজনীতি।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ সন্ধ্যা সাতটার দিকে ফেসবুকে একটি পোস্টে বলেন, জাতীয় বেইমান এই জাতীয় পার্টি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিজয়নগরে আমাদের ভাইদের পিটিয়েছে, অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। এবার এই জাতীয় বেইমানদের উৎখাত নিশ্চিত।