জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে ‘স্বেচ্ছাচারিতার’ অভিযোগ তুলে দলটির ঢাকা মহানগর উত্তরের ১০ থানার ৬৬৮ নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই গণপদত্যাগের ঘোষণা দেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সদ্য বহিষ্কৃত আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম সেন্টু।
সংবাদ সম্মেলনে সেন্টু বলেন, আজকের এই আয়োজন করেছে বহিষ্কৃত নেতা-কর্মীরা। সাংবাদিকরা দেখছেন, গত কিছু দিন ধরে জাতীয় পার্টিতে বহিষ্কার, অন্যায়-অপরাধ দলের চেয়ারম্যান ও মহাসচিব করে আসছেন। কিন্তু এর প্রতিবাদ করা যাবে না। কেন করা যাবে না? কারণ তারা দলকে নিজের মনে করে।
গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১১টি আসন পায় একাদশ সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে ২৬জন প্রার্থী দিয়েছিলো দলটি। নির্বাচনে ভরাডুবির জেরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে তুলোধুনো করেছেন দলটির পরাজিত প্রার্থীরা। সম্প্রতি রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে নির্বাচনে অংশ নেওয়া জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের এক মতবিনিময় সভায় বক্তরা জিএম কাদের ও চুন্নুকে ‘বাটপার, প্রতারক’ বলেও গালাগাল করেন।
দলটির বিক্ষুব্ধ নেতাদের দাবি, নির্বাচন উপলক্ষে সরকার জাতীয় পার্টিকে অনেক টাকা দিয়েছে। বেশি আসনে ছাড় দিতেও রাজি ছিলো। কিন্তু নিজেদের ব্যর্থতার কারণে জাতীয় পার্টি সেটা আদায় করতে পারেনি। এর জন্য দলের মহাসচিব চুন্নু বেশি দায়ী বলে মনে করেন তারা।
নির্বাচনের পর দলের চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে বনানীর দলীয় কার্যালয়ে বিক্ষোভও করে দলটির নেতা-কর্মীরা।
এরমধ্যে দলের বেশ কয়েকজন নেতা-কে বহিষ্কার করেছেন জি এম কাদের। যাদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, দলের জ্যেষ্ঠ নেতা সুনীল শুভ রায়ও আছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সেন্টু বলেন, তারা (চেয়ারম্যান-মহাসচিব) মনে করেন এটা তাদের মুদি দোকান। চেয়ারম্যান এটাকে মুদির দোকান মনে করেন। তিনি মালিক। সকালে আসেন সন্ধ্যায় অফিস থেকে বেরিয়ে যান। মানে একটা দোকানদার সকালে আসে সন্ধ্যায় বেরিয়ে যান। দোকনে বসে খাওয়া দাওয়া করেন। তিনি নিজে একটা ফাঁদ তৈরি করেছেন। কিছু লোক আছে তারা সারাদিন দোকানদারি করে সন্ধ্যার পর হিসাব দেন। হিসাব নিয়ে চেয়ারম্যান বাসায় চলে যান। এদের বেড়াজালে তিনি পড়ে গেছেন। এর থেকে বের হতে পারবেন না।
বহিষ্কৃত এই জাপা নেতা বলেন, গণমাধ্যমের মাধ্যমে বলতে চাই, ফাঁদ থেকে চেয়ারম্যান বের হতে পারবেন না। উনি লাট্টুর মতো ঘুরছেন। আর ওই লাট্টুর সুতা মহাসচিবের হাতে।
সংবাদ সম্মেলনে বহিষ্কৃত নেতা জাহাঙ্গীর আলম পাঠান এবং সুনীল শুভ রায়ও উপস্থিত ছিলেন।