যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পরেই রাশিয়ার সঙ্গে নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তি করল ভারত। মস্কোর থেকে পন্টসায় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম) কেনার জন্য এই চুক্তি।
আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পন্টসার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় একটি ট্রাকের ওপর রেডার, ১২টি ‘ভূমি থেকে আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্র (সারফেস টু এয়ার মিসাইল), ড্রোন এবং দুটি বিমান বিধ্বংসী কামান থাকে। ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর সাধারণ ভাবে ১৮ কিলোমিটার পাল্লার। কিন্তু নতুন ‘১-এস’ সংস্করণে ‘বুস্টার’ ব্যবহার করে সেগুলোর পাল্লা বাড়ানো হয়েছে। ভারত সেগুলো কিনতে চলেছে।
ভারত ডায়নামিক্স এবং রাশিয়ার রোজ়োবোরাএক্স সংস্থার মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘মউ’ অনুযায়ী রুশ প্রযুক্তিগত সহায়তায় এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভারতে নির্মাণ করা হবে।
প্রায় এক দশক আগে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ কেনার জন্য নয়াদিল্লি-মস্কো সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। ২০০৭ সালে প্রথম রুশ বাহিনীতে এস-৪০০ অন্তর্ভুক্ত হয়। ২০১৪-তে এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা কেনার বিষয়ে মস্কোর সঙ্গে যোগাযোগ করে নয়াদিল্লি। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে রাশিয়া থেকে এস-৪০০ কেনার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। ২০১৮ সালের অক্টোবরে পুতিনের দিল্লি সফরের সময় এ বিষয়ে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার চুক্তি সই হয়েছিল।
২০১৯ সালের গোড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, রাশিয়ার সঙ্গে এস-৪০০ কেনার চুক্তি বাতিল করলে ভারত টার্মিনাল হাই অলটিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড) এবং পেট্রিয়ট-৩ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা পাবে। কিন্তু প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের তুলনামূলক বিচার করে এস-৪০০ কেনার সিদ্ধান্তে অটল থাকে নয়াদিল্লি।
ঘটনাচক্রে, চার বছর পরে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত হওয়ার পরেই আবার নতুন করে নয়াদিল্লি-মস্কো প্রতিরক্ষা চুক্তি হলো।
ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে ভারতের বিরুদ্ধে ‘কাউন্টারিং আমেরিকাজ অ্যাডভারসারিজ থ্রু স্যাঙ্কশনস্ অ্যাক্ট’ (কাটসা) আইন অনুযায়ী পদক্ষেপের দাবি তুলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের দুকক্ষের কয়েকজন সদস্য।
২০১৭ সালে চালু করা ‘কাটসা’ আইন অনুযায়ী রাশিয়া, ইরান এবং উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে অস্ত্রশস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনলে যেকোনো দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপাতে পারে ওয়াশিংটন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের ‘ইন্ডিয়া ককাস’-এর সদস্য কয়েকজন সেনেটর এবং হাউস অব রিপ্রেজ়েটেটিভস সদস্যের বিরোধিতার জেরে নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি জো বাইডেনের সরকার।