ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাড়ি ফেরা শুরু হয়েছে। টার্মিনালে টার্মিনালে নাড়ির টানে ছুটছে মানুষ। গতকাল ছিল ঈদপূর্ব শেষ কর্মদিবস। দুপুরের পর থেকে সদরঘাটের দিকে ছিল মানুষের চাপ। আর সকাল থেকেই ছিল কমলাপুর স্টেশনে মানুষের ভিড়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাস টার্মিনালগুলোয় যাত্রীদের চাপ বাড়ে। সায়েদাবাদ, মহাখালী, গাবতলীসহ সর্বত্র ছিল ঘরমুখো মানুষের ঢল। যাত্রীচাপে গুলিস্তান থেকে সদরঘাট সড়কে যানজট তৈরি হয়। এদিকে এবারের ঈদযাত্রায় বাড়তি সতর্ক থাকতে বিশেষ প্রতিবেদন পাঠিয়েছে একটি সংস্থা।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছেÑ লঞ্চ টার্মিনাল ও অভ্যন্তরীণ নৌরুটে যাত্রীবেশে দুষ্কৃতকারীরা নাশকতা চালাতে পারে। বিদ্যমান নিরাপত্তা ঝুঁকি উত্তরণে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। তবে ইতিমধ্যে যাত্রীদের নিরাপত্তায় সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ফলে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।
ঈদযাত্রায় লঞ্চে যাতায়াত ও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালকেন্দ্রিক ঝুঁকি মূল্যায়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়Ñ গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিনষ্ট করার পাঁয়তারা করছে একটি মহল। অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করতে খুনি, ছিনতাইকারী, ধর্ষক, অগ্নিসংযোগকারী, আন্দোলনকারী ও ডাকাতের বেশে দেশকে অস্থিতিশীলতার চেষ্টা চলছে। নাশকতার অংশ হিসেবে ঈদযাত্রায় দূরপাল্লার বাস, ট্রেন ও লঞ্চগুলোকে টার্গেট করতে পারে। তাই নিরাপত্তা জোরদারের কথা বলা হয়েছে।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে দৈনিক ১২০টি লঞ্চ যাত্রী পরিবহন, ৪০-৫০টি লঞ্চ ট্রলারে পণ্য পরিবহন করে। সাধারণ সময়ে ১১০টি লঞ্চ চললেও ঈদযাত্রায় দুই শতাধিক লঞ্চ চলাচল করে।
এতে প্রতিদিন ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার আর ঈদে প্রায় এক লাখ যাত্রী চলাফেরা করেন। আগে সদরঘাটের প্ল্যাটফরমের গেট থাকত ৪-৫টি। ঈদের ভিড়ে ২১টি (সবগুলো) গেট খোলা। এ ছাড়া ১৮টি গ্যাংওয়ে রয়েছে। এসব স্থানে যাত্রীদের তল্লাশির ব্যবস্থা নেই। সিসি ক্যামেরা গেটে রয়েছে কয়েকটি, তবে তা অপ্রতুল। কিছু কিছু ক্যামেরা অচল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি আরও বাড়ানোর সুপারিশ করা হয় প্রতিবেদনে। লঞ্চের কেবিনে যাত্রীদের এনআইডি কার্ড ও মোবাইল নম্বর যাচাইয়ে অভিমত দেওয়া হয়েছে। টার্মিনালের প্রতিটি প্রবেশ গেটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।