বৃহস্পতিবার , ১৯ জুন ২০২৫ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. London Mirror Specials
  2. অন্যান্য
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া
  6. খুলনা
  7. খেলা
  8. চট্রগ্রাম
  9. জেলার খবর
  10. ঢাকা
  11. তথ্য-প্রযুক্তি
  12. প্রবাসের কথা
  13. বরিশাল
  14. বাংলাদেশ
  15. বিনোদন

মিথ্যা তথ্য ও প্রতারণায় ভরপুর জুলাই শহীদ ও আহতদের তালিকা

প্রতিবেদক
Newsdesk
জুন ১৯, ২০২৫ ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছে যে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের MIS তালিকা প্রস্তুতের প্রক্রিয়াটি যথাযথ স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য হয়নি। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাতে চাই যে, আমাদের ফাউন্ডেশনে জমা পড়া ফাইল বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে—একাধিক ব্যক্তি জুলাই গণ-আন্দোলনে আহত না হয়েও ভুয়া মেডিক্যাল ডকুমেন্টস ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে MIS ডাটাবেইজে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।

এটি শুধু হতাহতদের প্রতি অবিচার নয়, বরং শহীদদের আত্মত্যাগ ও জাতীয় গণআন্দোলনের প্রতি চরম অবমাননা। জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন মনে করে এই প্রক্রিয়া ছিল দুর্বল, অবহেলাপূর্ণ এবং ত্বরিত রাজনৈতিক চাপের ফলে বিকৃত। ”

এ বক্তব্য জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে সরকারের কাছে পাঠানো একটি চিঠির অংশবিশেষ। চিঠির বাক্যগুলো থেকে স্পষ্টতই লক্ষ্য করা যায়, জুলাই শহীদ এবং যোদ্ধাদের সহায়তা ও পুনর্বাসনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে (এমএইএস) যেসব নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সেই তালিকায় রয়েছে অসংখ্য ত্রুটি, প্রতারণা এবং জাল-জালিয়াতির আশ্রয়।

জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহত ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদ, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণের প্রমাণপত্র এবং উপযুক্ত অন্যান্য কাগজপত্রসহ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় অথবা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে গিয়ে সরকারিভাবে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করতে হয়।
গত বছরের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়ে যারা শহীদ বা আহত হয়েছেন তাদের নাম এমআইএস তালিকায় তোলার আগে তা যাচাই-বাছাই করে জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন কার্যালয় ও সরকার গঠিত গণ-অভ্যুত্থানসংক্রান্ত বিশেষ সেল।

বিভিন্ন মাধ্যমে খোজ নিয়ে জানা যায়, জুলাই অভ্যুত্থানে কোনোভাবে অংশগ্রহণ করেননি, হতাহতও হননি এমন ব্যক্তিদের নামও আছে এমএইএসের তালিকায়।

কেউ আবার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে সেই সময় আহত হননি, পরে কোনো দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন তারাও এমআইএসে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। আবার সড়ক বা অন্য কোনো দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তারাও নিজেদের জুলাই যোদ্ধা হিসেবে এমআইএসে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

এমনকি ৫ আগস্টের পরে বন্ধুর ছুরিকাঘাতে মৃত্যু হয়েছে, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছেন, পারিবারিক কলহের জেরে খুন হয়েছেন, চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন— এমন ব্যক্তিরাও আছেন জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদের তালিকায়।

ইতোমধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে সহায়তা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জুলাই ফাউন্ডেশনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে এসব প্রতারণার বিষয় চিহ্নিত করেন। ইতোমধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা মো. জাহিদ হোসাইন  বলেন, আমরা যাচাই-বাছাই করে ১৯ জনের নাম এমআইএস তালিকা থেকে বাতিলের জন্য চিঠি দিয়েছি। এ যাবত ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে শহীদ এবং জুলাই আহতদের তালিকায় স্থান পাওয়া প্রায় ৭০ জনের বেশি আমরা শনাক্ত করেছি। এদের বিরুদ্ধে আইনি কার্যক্রম চলমান আছে। আবার অনেকের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছি।

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান গ্রাহক সেবা কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমানের শাহবাগ থানায় চলতি বছরের ১৬ এপ্রিলে করা ১১ নম্বর মামলায় দেখা যায়, উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের মো. ইলিয়াস হোসেন হিরণের বাড়িতে গত বছরের ৭ আগস্ট পূর্ব শত্রুতার জেরে অজ্ঞাতনামা কিছু লোক হামলা করেন। সেই হামলায় তিনি আহত হন। পরে মেডিক্যাল ডকুমেন্টস জালিয়াতির মাধ্যমে নিজেকে জুলাই যোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেন এবং সরকারের কাছ থেকে দুই লাখ টাকার চেক নেন। এ বিষয়ে হিরণ স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন।

একই মামলায় দেখা যায়, ঢাকার মোহাম্মদপুরের জাফরাবাদের মো. লিটন নামের আরেকজন গত বছরের ১৪ জুলাই রাজু ভাস্কর্যের সামনে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন। আবার কখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় ৭১ হলের সামনে আহত হয়েছেন বলে জানান। প্রকৃতপক্ষে তিনি জুলাই বিপ্লবে আহত হননি। লিটনও প্রতারণা করে জুলাই আহত যোদ্ধা হিসেবে নিজের নাম তালিকাভুক্ত করেন। জাল কাগজপত্র উপস্থাপন করে লিটন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কাছ থেকে এক লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।

সর্বশেষ - আইন-আদালত