বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনে দেশব্যাপী অরাজকতার প্রতিবাদে নিউ ইয়র্কে শান্তির সমাবেশের আয়োজন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ । কিন্তু শান্তির সমাবেশ শেষ হয়েছে অশান্ত পরিবেশে। শনিবার বিকালে জ্যাকসন হাইটসে আওয়ামী লীগের এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা দেখা দেয়। একদিকে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের “জয় বাংলা” অন্যদিকে কোটা আন্দোলনের সমর্থকদের “ভুয়া ভুয়া” স্লোগানে উত্তপ্ত ছিলো পুরো এলাকা ।
পূর্বনির্ধারিত শান্তির সমাবেশে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতা-কর্মীরা যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন এবং কোটা আন্দোলনকারীদের দেশব্যাপী প্রাণহানী ও সম্পদের ক্ষতির প্রতিবাদে তারা বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে হাজির হোন। নেতা-কর্মীরা জয় বাংলা স্লোগানে মুখরিত করেন এলাকা, কিন্তু বিপত্তি বাধে শেষ পর্যায়ে। শান্তির সমাবেশের পাশেই বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনের সমর্থকরা জড়ো হোন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বেশ কিছু দেশে বিক্ষোভ করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এর মধ্যে আমিরাতে বিক্ষোভ করায় ৫৭ জন বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। বিষয়টি নিয়ে ‘বিব্রত’ সরকার।
কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরুর পর বিভিন্ন দেশে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করেন প্রবাসীরা। গত ১৯ জুলাই সংযুক্ত আরব আমিরাতে বেশ কয়েকটি সড়কে বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়। দেশটির আইন অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ বা স্লোগান দেওয়া নিষিদ্ধ। জনগণের মধ্যে অস্থিরতা, আতঙ্ক বা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো কাজ করা, গুজব বা অপপ্রচার চালানো কিংবা এ ধরনের কোনো বক্তব্য, ছবি বা ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা এদেশে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
নিয়ম ভেঙে সেখানে বিক্ষোভ করায় ৫৭ জন বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন দেশটির একটি আদালত। তাদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং বাকি একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া সৌদিতেও বিক্ষোভের কারণে কয়েকজনকে গ্রোফতারের খবর পাওয়া যায়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, বিদেশে নিয়ম ভেঙে সরকারবিরোধী এমন বিক্ষোভের ফলে আটক ও শাস্তির বিষয়টি নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে সরকার। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে শ্রমিক ভিসা নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। তবে সরকারের তরফ থেকে এটি সমাধানে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।