বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী ক্ষমতার অপব্যবহার করছে বলে অভিযোগ তুলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেখানে তথ্য বিভ্রাট হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রথম কথা হলো- এই অভিযোগটা বোধহয় ২০২১ এর, ২০২২ এর নয়। ২০২১ এ যে পরিমাণ গুম-খুনের কথা এখানে বলা হচ্ছে, আমাদের রেকর্ডে কিন্তু সে পরিমাণ নেই।’
‘আমরা সব সময়ই আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা যদি কেউ বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন, নিরাপত্তাবাহিনী আত্মরক্ষায় যদি গুলিও করে তাহলে প্রত্যেক ঘটনায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত করেন। এতে যদি ঘটনার সত্যতা প্রমাণ হয় তাহলেই সেই বিষয়টি আমরা ক্লোজ করে দেই। আর যদি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনে করেন এখানে ঘটনাটি অন্যায় বা অসতর্কতায় হয়েছে, সেটা আমরা বিচার বিভাগে পাঠিয়ে দেই।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা নিশ্চই জানেন- জেলখানায় আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর যথেষ্ট পরিমাণ, ইন্সপেকটর লেভেল থেকে ডিআইজি লেভেল পর্যন্ত কর্তকর্তা রয়েছেন। এটাই শুধু নয়, র্যাবেরও অনেক সদস্য রয়েছেন। এর অর্থ কেউই বিচারের ঊর্ধ্বে নয়। এখানে যিনি অন্যায় করবেন তাকেই বিচারের মুখোমুখি হতে হয়। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যেটা করেছে, তাদের তথ্য বিভ্রাট হয়েছে বলে আমি মনে করি।’
এ সময় মন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল- নিরাপত্তাবাহিনী রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার হচ্ছে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
উত্তরে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘এটা হতো তখন যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। পেছনের কথা যদি তারা বলে, এটা আমার জানা নেই। যখন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন, তখন থেকে কোনো ধরনের অন্যায়-অত্যাচার নিরাপত্তা বাহিনীর করলে তাকে কিন্তু আইনের মুখোমুখি আনা হচ্ছে। আমি সেটাই বারবার স্পষ্ট করে বলছি।’
‘গুম-খুনের কথা যেগুলো বলছেন- এগুলো প্রায়ই অনুসন্ধান করে আমরা দেখেছি, তারা অনেকেই হয়তো আত্মগোপন করে গুম বলে চালিয়ে দিয়েছেন। হয়তো ব্যবসায় লোকসান করে নিজেই কোথাও চলে গেছেন। এই কিছুদিন আগেও আপনারা দেখেছেন, এক লোক আড়াই বছর পর বলেছেন ইচ্ছে করেই গুম হয়েছিলেন পরিবারের অশান্তির কারণে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী অনেককেই খুঁজে বের করে দিয়েছে। আমি এখনো জোর গলায় বলতে পারি, যে প্রতিবেদনটা বের হয়েছে তাতে তথ্যের গরমিল রয়েছে।’
এ সময় সাংবাদিকরা মন্ত্রীর কাছে জানতে চান, মার্কিন ওই প্রতিবেদনে বিচার বিভাগ ব্যবহার করে রাজনৈতিক হয়রানি করার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিচারবিভাগ যখন যে নির্দেশনা দিচ্ছে সব জায়গায় সেটি পালন হচ্ছে। বিচার বিভাগ স্বাধীন, হয়রানি হবে কীভাবে?’