প্রথমদিন ১৩টি জেলায় ব্যালট পেপার, পোস্টাল ব্যালট পেপার, পোস্টাল ব্যালট পেপারের সঙ্গে সম্পর্কিত ফরম এবং স্ট্যাম্প প্যাড পাঠানো হবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জেলায়ও যাবে।
তবে যেসব নির্বাচনি আসনে মামলা রয়েছে সেখানে ব্যালট পেপার পরে যাবে।
ব্যালট পেপার সরাসরি রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানোর পর জেলা প্রশাসকের ট্রেজারি শাখায় সেসব সংরক্ষণসহ সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
নির্বাচন কমিশন আসনভিত্তিক ভোটার সংখ্যার সমান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নাম ও প্রতীকসহ ব্যালট পেপার ছাপানোর ব্যবস্থা করে। এবার দেশে মোট ভোটার এখন ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। তাদের মধ্যে ছয় কোটি সাত লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন পুরুষ; পাঁচ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন নারী এবং ৮৫২ জন হিজড়া।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, সোমবার থেকে জেলা পর্যায়ে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে ব্যালট পাঠানো হবে। ভোটের দিন জেলা থেকে সব উপজেলায় ব্যালট পাঠানো সম্ভব হবে না। কারণ ভোটের আগের দিন কেন্দ্র অনুযায়ী ব্যালট সেট করতে হবে, বাছাই করতে হবে। সেগুলো আগেই পৌঁছাতে হবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে।
প্রার্থিতা ফিরে পাওয়া বা বাতিল নিয়ে মামলাগুলো মাথায় রেখে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ব্যালট ছাপানো শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।
প্রথম দিন কোথায় যাবে ব্যালট
সোমবার প্রথমদিনে ১৩টি জেলায় ব্যালট পেপার, পোস্টাল ব্যালট পেপার, পোস্টাল ব্যালট পেপারের সঙ্গে সম্পর্কিত ফরম এবং স্ট্যাম্প প্যাড পাঠানো হবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জেলায় পাঠানো হবে।
সোমবার গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেস থেকে পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, মাগুরা ও রাঙ্গামাটি; বিজি প্রেস থেকে জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ঝালকাঠি ও ভোলা এবং সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস থেকে বরগুনা, পটুয়াখালী ও নেত্রকোনা জেলার ব্যালট পেপার বিরতণ করা হবে।
প্রতীক বরাদ্দের পরদিন ১৯ ডিসেম্বর থেকে ব্যালট পেপার ছাপানো শুরু হয় বলে জানিয়েছিলেন ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
তিনি বলেছিলেন, যেসব নির্বাচনি এলাকায় মামলা চলামান সেগুলো একটু পরে ব্যালট পেপার ছাপানো হবে। ৪০টিরও বেশি আসনে মামলা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রথম ধাপে ব্যালট পেপার পাঠানো সংক্রান্ত ইসির নির্দেশনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত উপযুক্ত প্রতিনিধিকে (জেলা নির্বাচন অফিসার/সহকারী কমিশনার) প্রয়োজনীয় সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট ছাপাখানা থেকে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের পরিবহন হিসেবে কার্ভার্ড ভ্যান আনতে বলা হয়। প্রতিনিধিকে তার নিজের পরিচয়পত্র বহনের পাশাপাশি জেলার নির্বাচনি এলাকাগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নাম ও প্রতীক এবং ভোটার সংখ্যার তথ্য আনতে বলা হয়েছে। এসব তথ্যের সঠিকতা যাচাই করে ব্যালট পেপার ও পোস্টাল ব্যালট পেপার বুঝে নিতে বলা হয়েছে।
ছাপাখানা থেকে ব্যালট পেপার ও পোস্টাল ব্যালট বুঝে নেওয়ার আগে নির্বাচন ভবনের গোডাউন থেকে স্ট্যাম্প প্যাড সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।
নির্দেশনায় ব্যালট পেপার, পোস্টাল ব্যালট পেপার, পোস্টাল ব্যালট পেপারের সঙ্গে সম্পর্কিত ফরম এবং স্ট্যাম্প প্যাড জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ট্রেজারি শাখায় সংরক্ষণসহ সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া ব্যালট পেপার ও পোস্টাল ব্যালট পেপার সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে পৌঁছানোর পর ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কোনও অসঙ্গতি দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
নির্বাচনি এলাকায় বা রিটার্নিং অফিসারদের কাছে ব্যালট পেপার পৌঁছে গেলেও মহানগর, জেলা ও উপজেলা সদরসহ অধিকাংশ এলাকায় ভোটের দিন সকালে ব্যালট পেপার পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।
তবে দুর্গম পার্বত্য এলাকা, হাওর ও চরাঞ্চলসহ জেলা-উপজেলা-মহানগর থেকে বেশি দূরে অবস্থিত কেন্দ্রে সকালে ব্যালট পাঠানো সম্ভব হবে না, সে বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারণ করবেন। গত ১৮ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তাদের এই তথ্য জানিয়ে দিয়েছে ইসি।