ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের উপকূলে একটি কাঠের নৌকার ডুবে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ওই নৌকায় আনুমানিক ১৫০ জনের মতো রোহিঙ্গা ছিলো এবং তাদের মধ্যে অন্তত ৫০ জনের প্রাণহানির খবর দিয়েছে আল জাজিরা।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার সময় বুধবার সকালে সমুদ্রের বিক্ষুব্ধ ঢেউয়ের আঘাতে কাঠের নৌকা উল্টে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে আচেহের পশ্চিম উপকূলের কুয়ালা বুবন সৈকত থেকে প্রায় ১৯ কিলোমিটারে দূরে।
আচেহির জেলেরা জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে ছয় রোহিঙ্গাকে তীরে নিয়ে এসেছে। তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি ফয়সাল রহমান।
পরে আল জাজিরাকে ফয়সাল বলেন, বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা বলেছেন যে, তাদের অনেকেই পানিতে ডুবে মারা গেছে। আমরা হতাহতের সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত করতে পারছি না।
‘তবে উদ্ধার হওয়া ছয়জনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা অনেক। তারা অনুমান করছেন যে, নৌকা ডুবে প্রায় ৫০ জন মারা গেছে,’ আল জাজিরাকে বলেন ফয়সাল রহমান।
ধারণা করা হচ্ছে, মৃতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। তারা সাঁতার কাটতে পারতো না এবং প্রবল স্রোত তাদেরকে সমুদ্রের গভীর নিয়ে গেছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় জেলেরা মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেছেন যা ইন্দোনেশিয়ার স্যোশাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে।
ওইসব ভিডিওতে দেখা গেছে, উল্টে থাকা নৌকার তলদেশের ওপর দাঁড়িয়ে কয়েকজন জীবন বাঁচানোর আপ্রাণ সংগ্রামে লিপ্ত। আর তাদের সবাইকে পুরুষ বলে মনে হয়েছে। তারা স্থানীয় জেলেদের দিকে হাত নেড়ে তাদেরকে উদ্ধারের জন্য অনুরোধ করছেন।
আচে বারাত জেলার জেলে সম্প্রদায়ের নেতা আমিরুদ্দিন বলেছেন, ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থা থেকে একটি উদ্ধারকারী জাহাজ পাঠানো হয়েছে। গত রাতে তারা ঘটনাস্থলে গিয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গা নৌকা খুঁজে পেয়েছে কিনা সে বিষয়ে কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
তবে ইউএনএইচসিআরের ফয়সাল রহমান আল জাজিরাকে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নৌকার সন্ধানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গত রাতের অনুসন্ধানে কোনো ফলাফল আসেনি। সকালে অনুসন্ধান অব্যাহত থাকবে।
নৌকাডুবির কারণের বিষয়ে আল জাজিরা লিখেছে, বাংলাদেশের ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের বহন করা কাঠের নৌকাগুলির অবস্থা খারাপ থাকে। আর এর ওপর প্রচণ্ড গাদাগাদি ভিড় হয়।