রূপপুরে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি আগামী অক্টোবর মাসেই বাংলাদেশে আসছে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।
দুইদিনের বাংলাদেশ সফরে এসে মঙ্গলবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে সময় তিনি এ কথা বলেন।
পরে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার।
তিনি বলেন, ইউরেনিয়াম পরিবহণ ও আমদানির আনুষ্ঠানিকতায় ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷
দুই দিনের সফরে বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকায় আসেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।
স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর রাশিয়ার কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর।
রাশিয়ার অর্থায়ন ও কারিগরি সহযোগিতায় পাবনার রূপপুরে তৈরি হচ্ছে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। ২৪০০ মেগাওয়াট এ কেন্দ্রের ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রথম ইউনিট চলতি বছরেই উৎপাদনে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ল্যাভরভের বৈঠকে রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধ নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার।
তিনি বলেন, ‘চলমান যুদ্ধ প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়৷ প্রধানমন্ত্রী বলেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত বন্ধের উপায় খুঁজে বের করতে হবে৷
‘যুদ্ধের এই পরিস্থিতিতে উন্নয়নশীল দেশগুলো সংকটে পড়েছে বলেও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান প্রধানমন্ত্রী৷’
বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক ছাড়া আর কি কি পণ্য রাশিয়া আমদানি করতে পারে সে বিষয়ে দেশটির শীর্ষ পর্যায়ে পর্যালোচনা চলছে বলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে জানিয়েছেন সের্গেই ল্যাভরভ৷
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বৈঠকে ঢাকা-মস্কোর মধ্যে অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক ইস্যুগুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন সের্গেই ল্যাভরভ। সেখানে তিনি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং পরিদর্শন বইয়ে মন্তব্য করেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় পৌঁছেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন সের্গেই ল্যাভরভ।
পরে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের কারও হস্তক্ষেপ প্রত্যাশিত নয়।
ল্যাভরভ বলেন, ‘জাতিসংঘ এবং বন্ধু দেশের চাপের পরেও বাংলাদেশ তার নিজের স্বার্থ রক্ষা করে চলবে বলেই রাশিয়া বিশ্বাস করে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোন ইস্যুতে হস্তক্ষেপ প্রত্যাশিত নয়। অব্যাহত চাপের পরেও ঢাকার তার পররাষ্ট্রনীতি সমন্বিত রেখেছে যা প্রশংসা যোগ্য।’