শনিবার , ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. London Mirror Specials
  2. অন্যান্য
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া
  6. খুলনা
  7. খেলা
  8. চট্রগ্রাম
  9. জেলার খবর
  10. ঢাকা
  11. তথ্য-প্রযুক্তি
  12. প্রবাসের কথা
  13. বরিশাল
  14. বাংলাদেশ
  15. বিনোদন

ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন: জাতিসংঘে প্রধান উপদেষ্টা

প্রতিবেদক
Newsdesk
সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫ ১১:২৯ পূর্বাহ্ণ

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি এই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

এসময় রোহিঙ্গা সঙ্কট, ঢাকায় মানবাধিকার কমিশন স্থাপন ও জলবায়ু সঙ্কট নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন তিনি। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে দেওয়া সব ধরনের সহযোগিতা ও সমর্থনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন প্রধান উপদেষ্টা।‌

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের পাচার হওয়া অবৈধ সম্পদ পুনরুদ্ধার করা বর্তমানে আমাদের অন্যতম শীর্ষ অগ্রাধিকার। গত ১৫ বছরে দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি ডলার অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। আমরা নিরলসভাবে এই সম্পদ ফেরত আনার চেষ্টা করছি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর আইনি প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার কারণে আমাদের এই প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর দৃঢ় সদিচ্ছা ছাড়া আমরা পাচার হওয়া অবৈধ সম্পদ পুনরুদ্ধারে সফল হবো না।

বাংলাদেশ আর কখনও স্বৈরশাসনের পথে ফিরবে না জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দলমত নির্বিশেষে গঠিত ঐকমত্যের ভিত্তিতেই দেশের গণতন্ত্র ও সংস্কার কার্যক্রম টেকসইভাবে এগিয়ে যাবে। নারীর ক্ষমতায়ন বাংলাদেশের অন্যতম অগ্রাধিকার বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, জনগণের আত্মত্যাগে অর্জিত ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র কাঠামো পুনর্গঠনের প্রক্রিয়াকে আর কোনো শক্তি বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।

ফিলিস্তিনের মানুষের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের শতভাগ সমর্থন আছে উল্লেখ করে, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ডাক দেন তিনি। ‌

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ও বিশ্বের বিবেকবান নাগরিকদের পক্ষ থেকে আমি আবারও জোরালো দাবি জানাচ্ছি যে, পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এ সমস্যার দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান এখনই বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি বলেন, শুধুমাত্র ১৯৬৭ সালের পূর্বের সীমারেখার ভিত্তিতে, যেখানে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে থাকবে, তখনই ন্যায়বিচার সম্পূর্ণভাবে কার্যকর হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি সবসময় মানুষকে আশার বাণী শুনিয়েছি, কখনও ভয় দেখিয়ে কিছু করা আমি সমর্থন করিনি। কিন্তু আজ আমাকে সেখান থেকে সরে এসে ভয়ংকর কিছু কথা বলতে হচ্ছে। আজ আমি সতর্ক করছি— চরম জাতীয়তাবাদ, অন্যের ক্ষতি হয় এমন ভূরাজনীতি এবং অন্যের দুর্ভোগ ও পীড়নের প্রতি ঔদাসীন্য বহু দশকের পরিশ্রমে আমরা যে অগ্রগতি অর্জন করেছি, তা ধ্বংস করে দিচ্ছে।

তিনি বলেন, এর সবচেয়ে মর্মান্তিক চিত্র আমরা দেখছি গাজায় । শিশুরা না খেয়ে অকাল মৃত্যুবরণ করছে, বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে, হাসপাতাল, স্কুলসহ একটি গোটা জনপদ নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হচ্ছে। জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সঙ্গে আমরাও একমত যে, আমাদের চোখের সামনেই একটি নির্বিচার গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, মানবজাতির পক্ষ থেকে এর অবসানে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি না। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, বাংলাদেশে আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের একটি শান্তির সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে—যেখানে সর্বস্তরে সহনশীলতা, অহিংসা, সংলাপ ও সহযোগিতার মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত করা হবে। গত সাড়ে তিন দশক ধরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অন্যতম শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে আমাদের অংশগ্রহণ, বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি আমাদের নিরবচ্ছিন্ন অঙ্গীকারের এক বাস্তব প্রমাণ। এমনকি এই মুহূর্তে প্রায় ৬ হাজার বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বিশ্বের সবচেয়ে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে জাতিসংঘের আওতায় দায়িত্ব পালন করছেন এবং আজ পর্যন্ত মোট ১৬৮ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী তাদের দায়িত্ব পালনকালে শহীদ হয়েছেন।

তিনি বলেন, একাধিক গবেষণায় একথা বার বার প্রমাণিত হয়েছে, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম অন্য যেকোনও একপাক্ষিক শান্তিরক্ষা উদ্যোগের তুলনায় অধিক টেকসই ও কার্যকর। তাই, বিশ্বের শান্তি রক্ষাকারী এই কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা ও কার্যকারিতা রক্ষায়— আমরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা অভিযানের জন্য স্পষ্ট ও বাস্তবসম্মত ম্যান্ডেট এবং পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ করবার দাবি জানাই। শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা এবং তাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের জবাবদিহি নিশ্চিত করাও সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত।

এ সময় আঞ্চলিক নিরাপত্তা রক্ষায় সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রোহিঙ্গা সংকট নিরসনের আহবান জানান প্রধান উপদেষ্টা। বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট শুধু বাংলাদেশ-মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ কূটনৈতিক সমস্যা নয়। রোহিঙ্গা সঙ্কটের ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য মিয়ানমারকে চাপপ্রয়োগ করতে হবে।

তিনি বলেন, ঢাকা পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ করার প্রয়োজন অনুভব করছে। নিস্তেজ হয়ে যাওয়া পারমাণবিক অস্ত্র নিরোধের চুক্তিগুলো পুনরুজ্জীবিত করে অশান্তও যুদ্ধংদেহী পরিস্থিতি থেকে বিশ্বকে বাঁচাতে হবে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে নিয়ে নানা ধরনের মিথ্যা অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। জুলাই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে পুরো বাংলাদেশ এক হয়েছে বলেও বিশ্ববাসীকে আশ্বস্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা। ‌

সর্বশেষ - আইন-আদালত

আপনার জন্য নির্বাচিত