তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত বলেই বিএনপি আজ ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারে মেতে রয়েছে।
আজ শুক্রবার সকালে সিলেট সার্কিট হাউসে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করলেও বিএনপি-জামায়াত খুশি তো নয়ই, বরং আতঙ্কিত। কারণ, শেখ হাসিনার এই সাফল্যে দেশের মানুষ খুশি, তাই তারা তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত ও আতঙ্কিত।
এ কারণে তারা এখন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। তারা রীতিমতো পয়সা খরচ করে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিএনপির মহাসচিব বাংলাদেশে মার্কিন সহায়তা বন্ধের জন্য নিজের স্বাক্ষরে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের কাছে ও বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি লিখেছেন, যাতে বাংলাদেশে সাহায্য দেওয়ার বিষয় পুনর্মূল্যায়ন করা হয়।
‘একটি রাজনৈতিক দলের মহাসচিব কিভাবে দেশকে সাহায্য দেওয়া বন্ধের উদ্দেশ্যে পুনর্মূল্যায়নের জন্য বিদেশে চিঠি লেখেন, তারা আবার দেশ পরিচালনার স্বপ্ন দেখে’- প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এরা দেশের ষড়যন্ত্রকারী, এরা দেশবিরোধী। ‘
এ সময় সংসদে সদ্য পাস হওয়া নির্বাচন কমিশন গঠন আইন প্রসঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রপ্রধানের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের উদাহরণ তুলে ধরেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, নেপালে ও শ্রীলঙ্কাতে রাষ্ট্রপ্রধানের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন হয়, পাকিস্তানেও সব প্রদেশের প্রধান বিচারপতিদের নিয়ে রাষ্ট্রপ্রধানের মাধ্যমেই হয়। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে তাদের গভর্নর জেনারেলরা, যারা রানির প্রতিনিধি, তাদের মাধ্যমেই নির্বাচন কমিশন গঠন হয়।
মন্ত্রী বলেন, সারা দুনিয়ার যে পদ্ধতি, তাকে আরো স্বচ্ছ করেছি আমরা। সেখানে সার্চ কমিটি নেই, আর আমাদের যে আইন হয়েছে, সেখানে সার্চ কমিটি ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবে, সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি ৫ জনকে নিয়োগ দেবেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, সর্বসম্মতিক্রমে আইন পাসের পর আবার মির্জা ফখরুল সাহেব বললেন, আইন হলেও তারা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবেন না। আসলে বিএনপিকে যে না রোগে পেয়েছে, সেখান থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারছেন না। কারণ তারা বুঝেছেন যে তারা জনগণের কাছ থেকে বহুদূরে সরে গেছে। তাই তারা নানা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, বিশেষ করে তরুণ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে একটি বড় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বেছে নিয়েছে। সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম প্রচারের পাশাপাশি তাদের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় থাকতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদকের মাধ্যমে জেলার সব যুব ইউনিট একযোগে কাজ করবে।
মতবিনিময়সভায় সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন এবং সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান বক্তব্য দেন। বৈঠক শেষে বাংলাদেশ বেতারের সিলেট কেন্দ্র ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের সিলেট উপকেন্দ্র পরিদর্শনে যান ড. হাছান।
আগে বৃহস্পতিবার রাতে সিলেটে পৌঁছেই প্রথমে হযরত শাহজালাল (রহ.) ও পরে হযরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করেন তথ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে ফাতেহা পাঠ ও দেশের অব্যাহত সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করেন। সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
এর আগে সিলেট বিমানবন্দরে সিলেটের ডিসি ও মহানগর আওয়ামী লীগ, জেলা তথ্য অফিস, বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) প্রতিনিধিরা মন্ত্রীকে স্বাগত জানান।