অবৈধভাবে ইউরোপে মানব পাচারের সময় বিমানের এক কর্মী ও কুয়েত এয়ার লাইন্সের বুকিং সহকারীসহ পাঁচ প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশের একটি দল। ডিবি কর্মকর্তা জানান, বিমান বন্দরের সব নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে দিনের পর দিন এই মানব পাচারকারীরা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে মানব পাচার করে আসছিলো। যার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বাংলাদেশের।
প্রতারকরা মানব পাচারের জন্য আকাশপথে সব জায়গায় নিজেদের লোক ঠিক করে রেখেছিলো যা বিস্মিত করেছে গোয়েন্দাদের। ডিবি কর্মকর্তা জানান, ইউরোপে পাঠানোর জন্য প্রতরকরা লোক সংগ্রহ করে প্রথমে তার পাসপোর্টে একটি জাল ইউরোপীয় ভিসার স্টিকার লাগাতো। পরে সেই পাসপোর্টধারীর নাম-নাম্বার ব্যবহার করে কাটা হতো বিমানের টিকিট।
যাত্রার দিন বিমানবন্দরের বোর্ডিং পার হওয়া ও এয়ারলাইন্সের সিট বরাদ্দের দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকও থাকতো এই চক্রেরই সদস্য। অনায়াসে মিলে যেতো বিমানের সিট।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেন, বিমানবন্দরের বোর্ডিং পার হওয়ার সময় সংশ্লিষ্টরা দেখেন ভিসা আছে কিনা, কিন্তু জড়িতরা ভুয়া ভিসা দেখেও বোর্ডিং দিয়ে দেয়। ফলে তারা ভুয়া ভিসা নিয়েই বিমানে উঠে যায়।
এ ডিবি কর্মকর্তা জানান, মাঝে মাঝে ট্রানজিট বন্দরে গিয়ে অনেকেই ধরা পড়তো। আবার সেখানেও পাচারকারীদের লোক থাকায় অনেকেই পৌঁছে যেতো কাঙ্ক্ষিত দেশের বিমানবন্দরে। কিন্তু ইমিগ্রেশন পার হতে গিয়ে ধরা পড়তো সকল জাল জালিয়াতি। বেশিরভাগকে সেখান থেকে ফেরত পাঠানো হলেও কেউ কেউ আইনের আশ্রয় নিয়ে থেকে যেতো পরিকল্পনা অনুযায়ী।
ডিবি প্রধান আরও জানান, আমরা তদন্ত করছি। যে পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়েছে তারমধ্যে একজন আছেন বাংলাদেশ বিমানের সিকিউরিটি ম্যান। আরেকজন কুয়েত এয়ারওয়েজের বুকিং এ্যাসিস্ট্যান্ট। তাদের সাথে কথা বলে আমরা জেনেছি, এখানে এয়ারলাইন্সের সিনিয়র কর্মকর্তা, স্টেশন ম্যানেজার, সুপারভাইজার জড়িত থাকতে পারে। এসব কর্মকর্তারা জড়িত না থাকলে অনেকে কীভাবে অনায়াসে বোডিং পাশ বা টিকিট পেয়ে যায়?
গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী আরো অভিযান চালানো হবে বলে জানান ডিবি প্রধান।