আফগানিস্তানে ব্যভিচারের শাস্তি হিসেবে নারীকে পাথর ছুড়ে হত্যা করা হবে বলে জানিয়েছে তালেবান সরকার। এক বার্তায় এ ঘোষণা দিয়েছেন তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা মোল্লা হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদা।
দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, এই ঘোষণায় ভীতি ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আফগান মানবাধিকারকর্মীরা।
তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতার সুযোগে নারীদের প্রকাশ্যে পাথর মারার প্রথা ফিরিয়ে আনতে যাচ্ছে তালেবান।
গত শনিবার এক ভিডিও বার্তায় আখুন্দজাদা বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নারীদের অধিকারের পক্ষে যে ওকালতি করছে তা শরিয়াহবিরোধী। আপনারা বলেন, পাথর মেরে হত্যা করা নারী অধিকারের লঙ্ঘন। কিন্তু আমরা শিগগিরই ব্যভিচারের শাস্তি কার্যকর করব। আমরা নারীদের জনসমক্ষে বেত্রাঘাত করব। আমরা তাদের জনসমক্ষে পাথর মেরে হত্যা করব।
তিনি আরও বলেন, আমি আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করি আর তোমরা শয়তানের প্রতিনিধিত্ব করো। কাবুল দখল নিয়েই তালেবানের কাজ শেষ হয়নি, এটি কেবল শুরু মাত্র।
২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে আফগানিস্তানের নারীরা অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে নারীদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
একজন তরুণ আফগান ছাত্র এএফপিকে বলেন, অনেক আফগান পরিবারের জন্য মেয়েদের একমাত্র ভবিষ্যৎ হলো বিয়ে। তাদের মধ্যে বিষণ্নতা ব্যাপক। গত দুই বছরে মেয়েদের আত্মহত্যার হার অনেক বেড়েছে। এটা দুঃখজনক।
আইনজীবী ও আফগান মানবাধিকার সংস্থা উইমেনস উইন্ডো অফ হোপের প্রধান সাফিয়া আরেফি বলেছেন, ঘোষণাটি আফগান নারীদের ১৯৯০-এর দশকে তালেবান শাসনের অন্ধকারতম দিনে ফিরে আসার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এই আইনজীবী আরও বলেন, তালেবান নেতার এই ঘোষণার মাধ্যমে ব্যক্তিগত শাস্তির একটি নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে এবং আফগান নারীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। তালেবানদের শাস্তি থেকে তাদের বাঁচাতে কেউ তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। নারী অধিকার লঙ্ঘন দেখেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নীরব থাকার পথ বেছে নিয়েছে।