একসময় ফেরি করে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করতেন বেলাল হোসেন। কিন্তু এতে আর্থিক টানাপোড়েন কাটছিল না তার। পরে অনেক চেষ্টায় মধ্যপ্রাচ্যের এক দেশে কাজের সুযোগ পান বেলাল। সব ধরনের প্রক্রিয়া শেষ করে সরকারি নিয়ম মেনে গত বছরের (২০২১ সালের) মার্চ মাসে কুমিল্লার একটি হাসপাতালে করোনা টেস্টের নমুনা দেন। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পরে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ওই হাসপাতালের চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে জনান, ‘বেলালের করোনা টেস্টের ফলাফল পজিটিভ এসেছে। কিন্তু তার করোনার ফলাফল পরিবর্তন করা সম্ভব। এ জন্য দিতে হবে ১০ হাজার টাকা।’
টাকা দেওয়ার পরেও মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে করোনার ফলাফল পজিটিভ আসে। বিশ্বাস করে টাকা দিয়েও বিদেশে না যেতে পেরে হাসপাতালে যোগাযোগ করেন বেলাল। হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা ব্যক্তি ওই হাসপাতালে কাজ করেন না। এসময় বেলাল বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। পরে একই বছরের এপ্রিল মাসে করোনা টেস্ট নেগেটিভ আসার পর মধ্যপ্রাচ্যে যেতে পারেন বেলাল।
তবে এর আগে করোনা টেস্ট করতে গিয়ে প্রতারণার বিষয়টি মানতে পারেননি বেলাল। তিনি প্রতিটি পদক্ষেপ বিচার বিশ্লেষণ করেন। যেভাবে তিনি নিজে প্রতারণার শিকার হয়েছেন, একইভাবে বিদেশগামীদের কাছ থেকে করোনার টেস্টের ফল পরিবর্তন করে দেওয়ার কথা বলে প্রতারণার জন্য একটি রূপরেখা তৈরি করেন। সেই অনুযায়ী বিদেশে যাওয়ার আগে ঘনিষ্ঠ বন্ধু সবুজকে নিয়ে একটি চক্র গড়ে তোলেন বেলাল। বন্ধু সবুজের সঙ্গে হাতিয়ে নেওয়া টাকার ভাগাভাগির চুক্তি করে বেলাল চলে যান মধ্যপ্রাচ্যে। এভাবেই প্রতারণার শিকার বেলাল হয়ে উঠলেন অভিনব এক প্রতারক চক্রের হোতা।