সরকারি চাকরিতে বীর মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা সুবিধা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-নাতনিরা কোটা সুবিধা পাবে? এমন প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এতো ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিরা কোটা পাবে? তা তো আমরা দিতে পারি না।
রোববার বিকেলে চীন সফর নিয়ে গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতি কোটা পাবে না তাহলে কী রাজাকারের নাতি-পুতিরা কোটা পাবে? সেটা আমার প্রশ্ন। দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন। মুক্তিযোদ্ধারা খেয়ে না খেয়ে কাদামাটি মাখিয়ে তারা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল বলেই আজ দেশ স্বাধীন। আজ সবাই বড় বড় পদে আসীন। নইলে তো ওই পাকিস্তানিদের বুটের লাথি খেয়ে চলতে হতো।’
তিনি বলেন, এখন যারা লাফাচ্ছে তারা মনে হয় পনেরো বিশ বছর আগের বিষয়টাও জানে না। আওয়ামী ক্ষমতায় আসার আগে বাংলাদেশের অবস্থা কী ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিল অস্ত্রের ঝনঝনানি, আর সেশন জোট। কোনো সেমিস্টার সিস্টেম ছিল না। গ্রেডিং পদ্ধতি ছিল না, বহু সাবজেক্ট ছিল না। কারিকুলামে পরিবর্তন আনা, সেমিস্টার সিস্টেম আনা, গ্রেডিং পদ্ধতি আনা সব কিছুই কিন্তু আওয়ামী এনে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আন্দোলন করছে তারা আইন মানবে না, আদালত মানবে না, সংবিধান কী সেটা তারা চেনে না। একটা কাজ করতে গেলে তার যে নীতিমালা, বিধিমালা বা ধারা থাকে বা একটা সরকার কীভাবে চলে এ সম্পর্কে কোনো ধারণাই এদের নাই, কোনো জ্ঞানই নেই।
তিনি বলেন, তারা পড়োশোনা করছে, ভালো নাম্বার পাচ্ছে সেটা ঠিক। কিন্তু ভবিষ্যতে এরা তো নেতৃত্ব দেবে, এই ধারণাগুলো তাদের তো দরকার। আমাদের সংবিধান কী বলে সেটা তাদের জানা উচিত। একটা রাষ্ট্র পরিচালনায় কী ধরনের কাজকর্ম চলে সে সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা আছে? সে ধারণা তো আমরা দেখি না। যেটা আদালতে চলে গেল সেটা আদালত দেখবে। আদালত তাদের সুযোগ দিয়েছে। তারা আদালতে যাক তাদের বিষয়গুলো বলুক। না তারা রাজপথেই সমাধান করবে। বিষয়টা যখন আদালতে চলে গেছে সেখান থেকে আদালত রায় দিয়েছে সেখানে তো আমার কিছু বলার নেই, এটা সংবিধানও বলে না।
আদালতের প্রসঙ্গে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু আদালতে বিষয়টা চলে গেছে আমাদের কিছু করার নেই। সংসদেরও কিছু করার নেই। তারা রাজপথে সমাধান করবে, তারা আন্দোলন করুক। তারা যতক্ষণ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবে করে যাক। কিন্তু কোনো ধ্বংসাত্মক কিছু করলে, পুলিশকে মারধর করলে, পুলিশের গাড়ি পোড়ালে তখন আইন তার আপন গতিতে চলবে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।