রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে বিনা টিকিটে ভ্রমণকারী তিন ট্রেনযাত্রীকে জরিমানাসহ ভাড়া আদায় করার পর সংশ্লিষ্ট ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষককে (টিটিই) সাময়িক বরখাস্ত করার ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঈশ্বরদীতে এ ঘটনা ঘটে। পরে ঈশ্বরদীর পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নাসির উদ্দিনের নির্দেশে আজ শুক্রবার থেকে টিটিই শফিকুল ইসলামের বরখাস্তের আদেশ কার্যকর হয়েছে।
রেলের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, খুলনা থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশন থেকে তিন যাত্রী বিনা টিকিটে এসি কেবিনে ঢাকা যাচ্ছিলেন। এ সময় কর্তব্যরত টিটিই শফিকুল ইসলাম তাদের টিকিট দেখতে চাইলে তারা রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেন। টিটিই বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে পাকশী বিভাগীয় রেলের সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নুরুল আলমের সঙ্গে আলাপ করলে তিনি সর্বনিম্ন ভাড়া নিয়ে এসি টিকিট না করিয়ে সাধারণ কোচের টিকিট কাটার পরামর্শ দেন।
এসিওর পরামর্শ অনুযায়ী টিটিই তাদের ৩৫০ টাকা জনপ্রতি হিসেবে ১০৫০ টাকা নিয়ে তিনটি সুলভ শ্রেণির নন-এসি কোচে সাধারণ আসনের টিকিট দেন। এ সময় ট্রেনে কর্তব্যরত অ্যাটেনডেন্টসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। ওই তিন ট্রেনযাত্রী তাৎক্ষণিকভাবে কোনো অভিযোগ না করলেও ঢাকায় পৌঁছে রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে টিটিই শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগ পেয়ে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন সংশ্লিষ্ট টিটিইকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেন। টিটিই শফিকুল ইসলামকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়।
ডিসিও নাসির উদ্দিন বলেন, ‘বিনা টিকিটধারী ওই তিন ট্রেনযাত্রীর সঙ্গে কর্তব্যরত টিটিই অসদাচরণ করেছেন বলে রেলের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে মুঠোফোনে অভিযোগ করা হয়। বিষয়টি আমাকেও জানানো হলে শফিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
টিটিই শফিকুল ইসলামের ভাষ্য, ‘বরখাস্তের বিষয়টি আমি ট্রেনে ডিউটিরত অবস্থায় মোবাইল ফোনে জানতে পেরেছি। রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেওয়ায় আমি তাদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এসিওর পরামর্শ মতো ব্যবস্থা নিই। তাদের সঙ্গে কোনোরকম অসদাচরণ করিনি।’