কোটা সংস্কার আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার’ স্লোগানের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার একটা কথা নিয়ে তারা কতদিন প্রতিবাদ করলো। কী কথা? আমি বলেছিলাম, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা মেধাবী না, তো রাজাকারের সন্তানরা মেধাবী! বিকেল ৪টায় প্রেস কনফারেন্সে বললাম, রাত ১১টার দিকে দেখলাম অনেক ছেলেরা হল থেকে বের হয়ে এসেছে। মেয়েরাও হল থেকে বের হয়ে এসেছে। তাদের স্লোগানটা কী ছিল? ‘তুমি কে আমি কে রাজাকার, রাজাকার, তোমার বাবা আমার বাবা রাজাকার রাজাকার’— তার মানে তারা নিজেদেরকে নিজেরাই রাজাকার হিসেবে প্রমাণ দিলো। আমি তো তাদের রাজাকার বলিনি।
সম্প্রতি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বিটিভির ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শনে গিয়ে আজ শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এ নিয়ে সরকারপ্রধান আরও বলেন, তারা নিজেরাই নিজেদের রাজাকার হিসেবে স্লোগান দিয়ে পরিচিত করলো সকলের কাছে। এটারই প্রতিবাদ কিন্তু সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ করেছিল। এমন কোনো শ্রেণির মানুষ নেই যারা এর প্রতিবাদ করেনি। এরপরই তারা স্লোগান পরিবর্তন করলো, তখন বললো চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার। আরে রাজাকার তো আমি তোমাদের করি নাই। তোমরা নিজেরাই স্লোগান দিয়ে তোমাদের রাজাকার করেছো। তোমরা স্লোগান দিয়ে পরিচিত করেছো তোমাদের বাবাও রাজাকার। এটি তোমরাই করেছো।
শেখ হাসিনা তার বক্তব্যের শুরুর দিকে বলেন, একটার পর একটা তাদের আবদার। তারা যা চেয়েছে তার চেয়ে বেশি দিয়েছি আমরা। মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার পরিবার, মুক্তিযুদ্ধে এসব নিয়েই যেন তাদের বেশি ক্ষোভ। আমার কথাটাকে বিকৃত করা হয়েছে। তারপর কোটা না মেধা, মেধা না কোটা… কোটা ও মেধার মধ্যে তফাৎটা কী আছে? প্রথমে প্রিলিমিনারি, এরপর লিখিত পরীক্ষা নেয়া হয়। তারপর ভাইবা নিয়ে পদায়ন করা হয়। তখন কোটা ভাগ করা হয়। তো এখানেও তো মেধাই প্রয়োগ করা হলো।
তিনি বলেন, হাইকোর্টের শুনানি ৭ আগস্ট ছিল। আমি নিজেই আইনমন্ত্রী, অ্যাটর্নি জেনারেলসহ সবাইকে নিয়ে বসে অনুরোধ করলাম উচ্চ আদালতে শুনানি এগিয়ে আনা যায় কি না। শুনানি এগিয়ে আনলো আদালত। এরপর শিক্ষার্থীদের বলা হলো, তোমরা আদালতে এসে আপিল করো। রায় হলো, শিক্ষার্থীরা জিতলো। এরপরও আন্দোলন থামালো না। তারা সড়ক থেকে উঠলো না কেন? প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। রাষ্ট্রপতিকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম…এখানে আল্টিমেটাম, ওখানে আল্টিমেটাম, আল্টিমেটাম দেয়া শুরু হলো। এটা কোন ধরনের কথা? একটা মানলে আরেকটা, আরেকটা মানলে আরেকটা…। এক দফার কোটা আন্দোলন চলে গেলো ৩ দফায়, এরপর ৬ দফা, তারপর ৮ দফা আবার ৩ দফা। যখনই যেটা চাচ্ছে দিয়ে দিলে আবার আরেক দফা… তারা যা চেয়েছে তার চেয়ে বেশি দেয়া হয়েছে। তাদের দাবি ছিল ৯০ শতাংশ আমরা ৯৩ শতাংশ করে দিয়েছি।