সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটে নয়, পরিকল্পিতভাবে কেউ হয়তো আগুন লাগিয়েছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সিনিয়র চিফ পেডি অফিসার মো. আমিনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ভেতরের পরিস্থিতি দেখে ধারণা করছি, শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগেনি।
এখানে দেখা গেছে বিভিন্ন স্থান থেকে আগুন লেগেছে বলে আমাদের প্রাথমিক ধারণা।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে সচিবালয়ের ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের আমিনুল ইসলাম এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে এখনও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। রাতে খবর পাওয়ার পর আমাদের ফায়ার টিম সচিবালয়ে চলে আসে।
সচিবালয়ের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একটা ভবনের নানা জায়গায় কীভাবে আগুন লাগলো- জানতে চাইলে আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি তো দেখিনি কীভাবে আগুন লেগেছে। তবে আমরা ভেতরের পরিস্থিতি দেখে ধারণা করছি, শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগেনি। যদি শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগতো তাহলে নানা স্থানে আগুন লাগতো না। কে, কারা বা কীভাবে আগুন লাগালো সেটার সঠিক তথ্য এখনও আমাদের হাতে আসেনি। প্রাথমিকভাবে আমার মনে হয় কেউ পরিকল্পিতভাবে এ কাজটি করেছে।
আপনার এ ধারণা কেন হলো- জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, এখানে যে আগুনটা লেগেছে সেটা বিভিন্ন স্থান থেকে লেগেছে। শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগলে যেকোনো এক পাশ থেকে লাগতো। এখানে দেখা গেছে বিভিন্ন স্থান থেকে আগুন লেগেছে। শর্টসার্কিটে হয়নি পরিকল্পিতভাবে কেউ হয়তো আগুন লাগিয়েছে।
ভেতরে কী রকম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে- জানতে চাইলে আমিনুল ইসলাম বলেন, ক্ষয়ক্ষতি কী পরিমাণ হয়েছে সেটা এ মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। যেসব স্থানে আগুন লেগেছে সেখানে কোনো নথিপত্র নেই, সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। যেখানে আগুন লেগেছে সেখানে মোটামুটি সবই পুড়েছে। আমরা সব এখনও চিহ্নিত করতে পারিনি। কাজ করছি।
আপনাদের কোনো সদস্য এখন ভেতরে আছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, আমাদের কিছু সদস্য এখনও ভেতরে রয়েছে, তারা কাজ করছে। আমাদের পুরো টিম আছে।
এর আগে বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ১টা ৫২ মিনিটে সচিবালয়ে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। সচিবালয়ে অবস্থিত ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করে রাত ১টা ৫৪ মিনিট থেকে। আগুনের তীব্রতা বেড়ে গেলে একে একে ১৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। শুরুতে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য ৮টি ইউনিট কাজ করলেও পরে আরও ১১টি ইউনিট যুক্ত হয়।
সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনের ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম তলায় ছড়িয়ে পড়ে আগুন। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ বা ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
তবে সাত নম্বর ভবনে থাকা নথিপত্র পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল এ তথ্য দেন।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়; যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়; ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; স্থানীয় সরকার বিভাগ; পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ; শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়; অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ; আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ; অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়; সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ রয়েছে।