মঙ্গলবার , ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. London Mirror Specials
  2. অন্যান্য
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া
  6. খুলনা
  7. খেলা
  8. চট্রগ্রাম
  9. জেলার খবর
  10. ঢাকা
  11. তথ্য-প্রযুক্তি
  12. প্রবাসের কথা
  13. বরিশাল
  14. বাংলাদেশ
  15. বিনোদন

ডেঙ্গুতে বেশি মারা যাচ্ছেন তরুণরা, বেশিরভাগ মৃত্যু শক সিনড্রোমে

প্রতিবেদক
Newsdesk
সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৫ ১০:৪০ পূর্বাহ্ণ

ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মারা যাচ্ছেন ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা। আর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে মারা যাওয়ার হার বেশি। এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গু ডেথ রিভিউ কমিটি। তারা জানায়, এ বছর ডেঙ্গু ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মারা গেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে। আর শক সিনড্রোমই বেশিরভাগ মৃত্যুর কারণ বলেও জানিয়েছে এই কিমিটি।

চলতি সেপ্টম্বরের প্রথম ২১ দিনে ৫৭ জনের মৃত্যুতে অনেকটাই দুশ্চিন্তা আছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে এই রোববারই বছরের সর্বোচ্চ ১২ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ডেঙ্গুতে মৃত্যু কেন বাড়ছে, তা অনুসন্ধান করেছে অধিদপ্তরের ডেঙ্গু ডেথ রিভিউ কমিটি।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক সংবাদ সম্মেলনে এই কমিটির পর্যালোচনা প্রতিবেদন তুলে ধরে। এতে বলা হয়েছে, চলতি বছর ৫৬ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে (ডিএসএস)। এছাড়া ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে জটিল উপসর্গে (ইডিএস)।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ১১৩ জনের মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বেশিরভাগ রোগী মৃত্যুর আগে শকড্রোম, শরীরের অঙ্গ বিকল বা জটিল উপসর্গে ভুগছিলেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী মারা গেছেন ডেঙ্গু শক সিনড্রোমের কারণে।

প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, ডেঙ্গু হেমোরেজিক সিনড্রোমে (ডিএইচএস) একজনের মৃত্যু হয়েছে। ডিএসএস ও বিইডিএসের কারণে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের, অঙ্গ বিকলজনিত জটিলতা ও বহু অঙ্গ বিকলের কারণে ৫ জনের, হৃদযন্ত্রের শকে আক্রান্ত ডেঙ্গু রোগে মারা গেছেন ৬ জন।

এ তথ্য থেকে বোঝা যায়, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যারা প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা না পেয়ে জটিল অবস্থায় পৌঁছেছেন, তাদের মধ্যেই মৃত্যুহার বেশি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগী ভর্তি হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে; যা চিকিৎসা দেরির ইঙ্গিত দেয়।

এ বছর ডেঙ্গুতে ঢাকা ও বরগুনা জেলায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে। জেলার হিসেবে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি ১৭ এবং বরগুনা জেলায় ১২ জন মারা গেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সবচেয়ে বেশি ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২ জনের মৃত্যু হয়। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মৃত্যু হার সবচেয়ে বেশি। ১৯ জনের বয়স ছিল ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।

মৃতদের অধিকাংশ ৩ থেকে ৬ দিন জ্বরে ভোগার পর হাসপাতালে এসেছেন। ১২৪ জনের মধ্যে ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে ভর্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ জন,  ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ৫ জন এবং ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে ভর্তির ৭২ ঘণ্টা পর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বলেন, মৃত্যুর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ডেঙ্গুতে যারা মারা গেছেন, তাদের অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন। রোগীরা অনেক সময় দেরিতে হাসপাতালে আসছেন। খারাপ অবস্থায় ভর্তি হচ্ছেন। ফলে চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ কমে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সবার সচেতন হওয়া জরুরি। সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ার কারণে বাড়িয়ে দিচ্ছে মৃত্যুর ঝুঁকি।

মহাপরিচালক বলেন, রোগ চিহ্নিত হওয়ার শুরুতেই চিকিৎসা শুরু না হলে, অনেক সময় রোগ দ্রুত জটিল আকার ধারণ করে। বিশেষ করে শক, রক্তক্ষরণ ও অঙ্গ বিকলের মতো জটিলতা দেখা দিলে রোগীকে বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়ে। এই রোগ যদি শুরুতেই চিহ্নিত করা না যায়, সময়মতো চিকিৎসা শুরু না হয়, তাহলে মৃত্যুর ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। এই মুহূর্তে মানুষের সচেতনতাই সবচেয়ে বেশি জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, গত কয়েক দিনে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা বেড়েছে। প্রতি বছর বর্ষায় এমনটা দেখা যায়। গত বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুনে মারা যান ৮ জন, জুলাইয়ে ১৪ জন, আগস্টে ৩০ জন এবং সেপ্টেম্বরে মারা যান ৮৭ জন। সে বছরের জুনে রোগী ভর্তি হয়েছিলেন ৭৯৮ জন, জুলাইয়ে ২ হাজার ৬৬৯, আগস্টে ৬ হাজার ৫২১ এবং সেপ্টেম্বরে ১ হাজার ৮৯৭ জন। এ পরিসংখ্যান দেখে বলা যায়, সেপ্টেম্বরেই সবচেয়ে বেশি রোগী আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যুও ঘটেছে বেশি।

সর্বশেষ - আইন-আদালত