মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে আঘাত হানতে চলেছে শক্তিশালী সামুদ্রিক ঝড় হ্যারিকেন মিল্টন। স্থানীয় সময় বুধবার আঘাত হানতে চলা এ ঝড়ের প্রভাবে ফ্লোরিডার টাম্পাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, হ্যারিকেন মিল্টন এই শতাব্দীর অর্থাৎ গেলো ১০০ বছরের মধ্যে মার্কিন উপকূলে আছড়ে পড়া সবচেয়ে বিধ্বংসী ঝড়গুলোর একটি হতে পারে।
এই ঝড়ের প্রভাবে ফ্লোরিডায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি ফ্লোরিডার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো অবিলম্বে খালি করতে নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ জানান।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি এই অঞ্চলের সমস্ত রাজনৈতিক নেতাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন এবং তাদের বলেছেন, মানুষের জন্য তারা যা কিছু চায়, তারা তা পাবে।
এরইমধ্যে মিল্টনকে ক্যাটাগরি-৫ হ্যারিকেন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এর কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ মাইল। সাফির স্যাম্পসন স্কেলের পাঁচটি ধাপের মধ্যে হারিকেনটি সবচেয়ে শক্তিশালী মাত্রার।
এমন পরিস্থিতিতে নিজের জার্মানি ও অ্যাঙ্গোলা সফর বাতিল করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আতঙ্কে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে হাজার হাজার মানুষ অন্যত্র পালিয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে বেশ কিছু রাস্তায় গাড়ির জট তৈরি হয়েছে। রাতেও রাস্তাগুলোতে জট রয়েছে।
সেখানকার পরিস্থিতিকে ভয়াবহ হিসেবে উল্লেখ করেছে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো। প্লেন, ট্রেন কিংবা গাড়িতে যে যেভাবে পারছেন পালাচ্ছেন।
সর্বশেষ সতর্কতায় টাম্পার জাতীয় আবহাওয়া সার্ভিস বলেছে, ঝড়টির গতিপথ যদি একই রকম থাকে, তাহলে এটি গত ১০০ বছরের মধ্যে টাম্পাতে আঘাত হানা সবচেয়ে বিধ্বংসী ঝড় হবে। মিল্টন এখনও ফ্লোরিডা উপকূলের জন্য বিপর্যয়কর ঝুঁকি হিসেবে অবস্থান করছে।
হ্যারিকেন মিল্টনের প্রভাবে ফ্লোরিডার পশ্চিম উপকূল ও মধ্যাঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যা দেখা দিতে পারে।
এদিকে ঝড়ের শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় সেখানকার সাধারণ মানুষকে বাধ্যতামূলকভাবে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
টাম্পার বাসিন্দাদের উদ্দেশে মেয়র জেন ক্যাস্টর বলেছেন, হ্যারিকেন মিল্টনের ফলে সেখানে বিপর্যয়কর দেখা দেবে। যদি নির্দেশনা অনুযায়ী সরে না যান তাহলে আপনারা নিশ্চিতভাবে মারা যাবেন।
তিনি আরও বলেন, সত্যি বলতে আমি আমার জীবনে এমন কিছু আগে কখনও দেখিনি।
ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের পরিচালক মাইকেল ব্রেনান সিএনএনকে বলেন, ঝড়টি আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। এটি আরও বেশি মানুষের ক্ষতি করবে।
টাম্পার মেয়র অফিস জানিয়েছে, যে কোনো প্রতিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি, সরকারি-বেসরকারি উদ্ধারকারী দল, চিকিৎসক ও প্রশাসনকে প্রস্তুত রাখা রয়েছে।