স্বতন্ত্র স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে সড়ক ছেড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
তারা বলছেন, দাবি আদায় না হলে আগামী ২৩ অক্টোবর থেকে আবারও আন্দোলনে যাবেন।
এর আগে বেলা ১২টার পর থেকে নীলক্ষেত-সাইন্সল্যাব মোড়ে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় সড়কে দীর্ঘ যানজট দেখা যায়।
উপস্থিত শিক্ষার্থীদের এ সময় ‘অধিভুক্তি নাকি মুক্তি, মুক্তি, মুক্তি’, ‘শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য, মানি না, মানব না’, ‘আর নয় দাসত্ব, হতে চাই স্বতন্ত্র’, ‘ঢাবির জায়গায় ঢাবি থাক, সাত কলেজ মুক্তি পাক’, ‘নিপীড়ন নাকি অধিকার, অধিকার, অধিকার’, ‘প্রশাসনের প্রহসন, মানি না মানব না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকে সেশন জট, শিক্ষক সংকটসহ নানামুখী সমস্যায় বিঘ্ন ঘটছে তাদের পড়াশোনায়।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ২০১৭ সাল থেকে উন্নত শিক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয় রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে। তবে সেই উন্নত শিক্ষার লক্ষ্যে নেয়া কোন পদক্ষেপই বাস্তবায়িত হয়নি। উল্টো শিক্ষক সংকট, সেশনজট পিছু ছাড়ছেনা তাদের।
শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানালেও বৈষম্য নির্মূলে কোন পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
সোমবার শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি জানিয়েছেন। তাদের দাবিগুলো হলো-
১) সাত কলেজ নিয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করার অভিপ্রায়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি সংস্কার কমিটি গঠন করতে হবে।
২) সংস্কার কমিটি অনধিক ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সাত কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে সাত কলেজের সমন্বয়ে শুধু একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার রূপরেখা প্রণয়ন করবেন।
৩) সংস্কার কমিটি বর্তমান কাঠামো সচল রাখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবেন; যাতে করে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সেশন জটিলতার কোনও ধরনের পরিবেশ তৈরি না হয়।
এর আগে রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীরা জানায়, ২০১৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। তবে, এ সিদ্ধান্ত ছিলো সম্পূর্ণ অপরিকল্পিত। ফলে যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে নিয়ে এ কলেজগুলোকে অধিভুক্ত করা হয়েছিল, সেটা বিগত ৮ বছরেও অর্জন করা সম্ভব হয়নি।
বিপরীতে এসব কলেজের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনে নেমে আসে চরম বিশৃঙ্খলা। এক কথায় শিক্ষার মানের উন্নতির পরিবর্তে ঢাবি প্রশাসনের বৈষম্যমূলক বিভিন্ন নীতি ও প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার যথাযথ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাতটি কলেজ হলো- সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ, সরকারি শহিদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজ।