প্রায় ৩০৪ কোটি টাকা লোপাটের মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার করে দ্রুত তদন্ত ও বিচারের দাবি জানানো হয়েছে। সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এতে বক্তৃতা করেন সংগঠনের উপদেষ্টা ড. সুফী সাগর সামস। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রায় ৩০৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৫ মে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে সম্পৃক্তদের আসামি করা হলেও রহস্যজনকভাবে একজন ট্রাস্টি সদস্যের নাম বাদ পড়েছে যা গভীর উদ্বেগের। অভিযুক্ত প্রত্যেকেই সমাজের প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর ব্যক্তি। তাই তারা যেন আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যেতে না পারে-সে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, লাগামহীন দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, সিন্ডিকেট আর জঙ্গিবাদে পর্যুদস্ত দেশের অন্যতম বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। মূলত আজিম-কাশেম সিন্ডিকেটের কারণেই নর্থ সাউথ অনিয়ম-দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর জীবন। এত অনিয়মের কারণে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার মান ক্রমেই নিম্নমুখী। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ট্রাস্টি ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আজিম উদ্দিন আহমেদ ও এমএ কাশেম সিন্ডিকেটের হাতে গোটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই যেন জিম্মি হয়ে আছে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচাতে এবং ট্রাস্টিদের এসব অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধের জন্য দুদকের মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তি জরুরি। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার কাজ শেষের দাবি জানান তিনি। নয়তো কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন-ফররুখ আহমেদ খসরু, ড. শের সাফায়াত আলী খান, হুমায়ুন মিজি ও এম ইব্রাহীম পাটোয়ারী।
প্রসঙ্গত, ৫ মে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এমএ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, মোহাম্মদ শাহজাহান ও আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আমিন মো. হিলালীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় বিশ্ববিদ্যায়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় অর্থাৎ সরকারের সুপারিশ/অনুমোদনকে পাশ কাটিয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের কিছু সদস্যের অনুমোদনের মাধ্যমে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ডেভেলপমেন্টের নামে ৯ হাজার ৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমাল জমির ক্রয়মূল্য বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা অতিরিক্ত অর্থ হস্তান্তর, রূপান্তর, স্থানান্তর ও গোপন করার মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির সদস্যদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির আরও অভিযোগ রয়েছে। সেসব অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে।