রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

বঙ্গোপসাগরের তেল-গ্যাসের ২৬ ব্লক, তবু সুফল পাচ্ছে না বাংলাদেশ

দেশের সমুদ্রসীমায় মোট ২৬টি তেল-গ্যাস ব্লক রয়েছে। এর মধ্যে অগভীর অংশে ১১টি ও গভীর সাগরে ১৫টি। সীমানাবিরোধ নিষ্পত্তির পর ভারত ও মিয়ানমার দ্রুতগতিতে বঙ্গোপসাগরে তাদের অংশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়। এক্ষেত্রে পিছিয়ে বাংলাদেশ। সাগরের তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের সক্ষমতাই নেই আমাদের। বিদেশি কোম্পানিগুলোর সহযোগিতা নেওয়ার ক্ষেত্রেও রয়েছে নানাবিধ জটিলতা। ফলে বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস থাকলেও তা ভোগ করতে পারছে না বাংলাদেশ।

পেট্রোবাংলা জানায়, যুক্তরাষ্ট্র্রভিত্তিক তেল-গ্যাস কোম্পানি কনোকো ফিলিপস ২০০৮ সালের দরপত্র প্রক্রিয়ায় গভীর সমুদ্রের ডিএস-১০ ও ডিএস-১১ ব্লক ইজারা নিয়েছিল। দুই বছর অনুসন্ধান কাজ করার পর গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মতভেদের কারণে ২০১৪ সালে ব্লক দুটি ছেড়ে দেয় কোম্পানিটি। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ডাকা অন্য একটি আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে গভীর সমুদ্রের ডিএস-১২, ডিএস-১৬ ও ডিএস-২১ এই তিন ব্লকের জন্য যৌথভাবে দরপ্রস্তাব জমা দিয়েছিল কনোকো ও স্টেট ওয়েল। পরে কনোকো নিজেকে সরিয়ে নেওয়ায় ব্লকগুলো ইজারা দেওয়া সম্ভব হয়নি। সাগরে তেল-গ্যাসের সন্ধান পেলেও তা থেকে সুফল পেতে কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয় বছর সময় লাগে। ২০১৪ সালে ব্লক দুটো ছেড়ে না দিলে বর্তমানের এই ক্রান্তিকালে বঙ্গোপসাগরের তেল-গ্যাস বাংলাদেশ ভোগ করতে পারতো।

মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রবিজয়ের আগে ২০১১ সালের জুন মাসে গভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য ব্লক ডিএস-১০ ও ১১ এর জন্য কনোকো ফিলিপসের সঙ্গে একটি চুক্তি সই হয়। চুক্তি অনুযায়ী ব্লক দুটিতে পাঁচ হাজার ৮শ লাইন কিলোমিটার ২ডি সার্ভে করা হয়। ওই সময় কনোকো ফিলিপস চুক্তিতে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করে। বিষয়টি সরকারের পক্ষ থেকে গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় তারা ২০১৪ সালে ব্লক দুটি ছেড়ে চলে যায়।

২০১২ সালে মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রবিজয়ের পর বাংলাদেশ অফশোর বিডিং রাউন্ড (দরপত্র) ২০১২ এর আওতায় ওএনজিসি ভিডেস লিমিটেড, অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের সঙ্গে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ব্লক এসএস ০৪ এবং ০৯- এর জন্য দুটি চুক্তি সই হয়। ব্লক দুটিতে ৫ হাজার লাইন কিলোমিটার ২ ডি সার্ভে করা হয়। সার্ভের পর তারা ২০২২ সালের মার্চ মাসে ব্লক এসএস ০৪ এ একটি কূপ খনন করে। কিন্তু কূপটিতে গ্যাস পাওয়া যায়নি।

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ওএনজিসি ব্লক এসএস-০৪ এবং ০৯- এ আরও দুটি কূপ খনন করবে। একই বিডিং রাউন্ডের আওতায় ২০১৪ সালের মার্চ মাসে অগভীর সমুদ্রের ব্লক এসএস-১১ এর জন্য সান্তোসের সঙ্গে একটি চুক্তি সই হয়। এ ব্লকে ৩ হাজার ১০০ লাইন কিলোমিটার ২ডি সার্ভে করা হয়। ব্লকটি সম্ভাবনাময় হওয়া সত্ত্বেও সান্তোস এশিয়া থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ায় ২০২০ সালে এ ব্লকটি ছেড়ে চলে যায়।

২০১৬ সালে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা জয়ের পর ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ব্লক ডিএস-১২ এর জন্য পসকো দেউয়ের (POSCO Daewoo) সঙ্গে আরেকটি চুক্তি সই হয়। এ ব্লকে ৩ হাজার ৫০০ লাইন কিলোমিটার ২ডি সার্ভে করা হয়। চুক্তির শর্তাবলি তাদের ব্যবসার জন্য অনুকূলে না হওয়ায় ২০২০ সালে তারাও ব্লকটি ছেড়ে চলে যায়। নতুন বিডিং রাউন্ডের মাধ্যমে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য অফশোর মডেল পিএসসি (প্রডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট)-২০১৯ এর আওতায় আন্তর্জাতিক বিড আহ্বানের কথা থাকলেও কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতির কারণে তা সম্ভব হয়নি।

কোভিডের কারণে আন্তর্জাতিকভাবে এ সেক্টরের দৃশ্যপট অনেকটা পরিবর্তন হওয়ায় আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে অফশোর মডেল পিএসসি (প্রোডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট)-২০১৯ আরও আধুনিক করার লক্ষ্যে জুন ২০২২ মাসে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হয়েছে। পরামর্শকের মতামত পাওয়ার পর নতুন অফশোর মডেল পিএসসি চূড়ান্ত করা হবে। নতুন অফশোর বিড রাউন্ড (দরপত্র) আহ্বান করা হবে বলে জানায় পেট্রোবাংলা।

ভারত-মিয়ানমার এগিয়ে থাকলেও বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে বাংলাদেশ পিছিয়ে কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে পেট্রোবাংলার ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, পেট্রোবাংলা কিন্তু বসে নেই। মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রবিজয়ের আগেই গভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য ব্লক ডিএস-১০ ও ১১ এর জন্য কনোকো ফিলিপসের সঙ্গে একটি চুক্তি সই করি। চুক্তি অনুযায়ী ব্লক দুটিতে ৫ হাজার ৮০০ লাইন কিলোমিটার ২ডি সার্ভে করা হয়। ওই সময় কনোকো ফিলিপস চুক্তিতে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করে। বিষয়টি সরকারের পক্ষ থেকে গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় তারা ২০১৪ সালে ব্লক দুটি ছেড়ে চলে যায়।

‘এটা না হলে বাংলাদেশ এখন বঙ্গোপসাগরের তেল-গ্যাস ব্যবহার করতে পারতো। কারণ একটি ব্লক থেকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের পর আহরণ করতে পাঁচ থেকে ছয় বছর সময় লাগে। আসলে কোনো একটি বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরের অপার সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে। তাই বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে হলে উভয়পক্ষকে ছাড় দিতে হবে। তা না হলে হবে না।’

Facebook
X
WhatsApp
Email
Telegram
সর্বশেষ
ফেসবুক নেটওয়ার্ক ও পার্টনার পেজ
মিডিয়া
Cover for Table Talk Uk
595,824
Table Talk Uk

Table Talk Uk

Table Talk UK Discusses the political and social issues of the country. Our only purpose is to expose social inconsistencies and politics in the face of accountability on the path to democracy and talk about the rights of people.

This message is only visible to admins.
Problem displaying Facebook posts. Backup cache in use.
PPCA Error: Due to Facebook API changes it is no longer possible to display a feed from a Facebook Page you are not an admin of. The Facebook feed below is not using a valid Access Token for this Facebook page and so has stopped updating.

Smash Balloon Custom Facebook Feed WordPress Plugin The Custom Facebook Feed plugin

সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!
রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
কপিরাইট © 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত — লন্ডন মিরর।
সম্পাদক: হাসিনা আক্তার
সার্চ করুন
লগইন/সাইন আপ
সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!