ডলার কারসাজির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দেশি-বিদেশি ৬টি ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে অপসারণ করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৮ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম। তবে তিনি ব্যাংকগুলোর নাম জানাননি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চিঠি পাওয়া ব্যাংকের তালিকায় বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংক ও বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক রয়েছে।
এদিকে, খোলা বাজারে আজ ১১৫ টাকায় পৌঁছেছে ডলারের দাম, যা বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত আন্তঃব্যাংক দরের চেয়ে অনেক বেশি। আন্তঃব্যাংক ডলার দর আজ ছিল ৯৫ টাকা।
খোলা মার্কেটে ডলারের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলেছেন, যারা খোলা বাজারে ডলারের অবৈধ ব্যবসা করছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। এ পর্যন্ত পাঁচটি মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ৪২টিকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। শোকজের যথাযথ উত্তর দিতে পারলে এসব মানি এক্সচেঞ্জের লাইসেন্সের বিষয়ে বিবেচনা করা হবে। অভিযানে আরও ৯টি প্রতিষ্ঠানকে সিলগালা করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স না নিয়ে এতদিন ব্যবসা করে আসছিল।
কোভিড-পরবর্তী সময়ে আমদানি বৃদ্ধি ও রেমিট্যান্স কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে আর্থিক খাত। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। বিদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে বেড়েছে খরচ। ফলে তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে ডলারের বাজারে। কমতে শুরু করেছে রিজার্ভ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের পরও নিয়ন্ত্রণে আসছে না ডলারের বাজার।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এলসি খোলা কিংবা আমদানি পণ্যের পেমেন্ট পরিশোধের জন্য তাদের অনেককে বেশি দরে ব্যাংক থেকে ডলার নিতে হচ্ছে। সময়মতো আমদানি বিল পরিশোধ করতে না পারলে হুমকির মুখে পড়বে বাণিজ্য। তাই ডলারের উৎসের দিকে না তাকিয়ে যেকোনো মূল্যে ডলার কিনছেন আমদানিকরকরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, ব্যাংকের মতো খোলাবাজারেও ডলারের সংকট দেখা দিয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ডলার নেই। অনেকে ডলার কিনে ধরে রাখতে চাইছে। এ জন্য লাগামহীন দর বাড়ছে। এছাড়া প্রবাসীদের দেশে আসা কমেছে, বিদেশি পর্যটকও কম আসছেন এখন। এ কারণে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেশ কমে গেছে।