বরগুনার পাথরঘাটায় বরগুনা-২ আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম মনির গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ বিএনপির সংঘর্ষে উভয় দলের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
এ সময় শতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও দুটিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল বাশার।
তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি চৌধুরী ফারুক জানান, আগামীকাল (৫ সেপ্টেম্বর) তেল গ্যাস ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দিয়েছে পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপি। বরগুনা-২ আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম মনি ওই সমাবেশে যোগ দিতে রোববার সড়ক পথে ঢাকা থেকে পাথরঘাটার উদ্দেশে রওনা করেন। বিকাল ৪টার দিকে পাথরঘাটা-মঠবাড়িয়া সড়কের সিএন্ডবি এলাকায় পৌঁছলে সেখানে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মনির গাড়িবহরে হামলা চালায়।
এতে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে বিএনপির সভাপতি চৌধুরী ফারুকের দাবি। তিনি আরও দাবি করেন, হামলায় তাদের ৭০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও দুটিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
চৌধুরী ফারুক বলেন, রায়হানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাইনুল ইসলাম ও কাকচিড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন পল্টুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সহস্রাধিক নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে নুরুল ইসলাম মনির গাড়িবহরে হামলা চালায়। এতে নুরুল ইসলাম মনিও আহত হয়েছেন। আমি নিজেও হামলার শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন।
পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাবির হোসেন বলেন, সারা দেশে আন্দোলনের নামে বিএনপির নৈরাজ্য, হামলা ভাঙচুর ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগ ৫ সেপ্টেম্বর পাথরঘাটায় সমাবেশের ডাক দিয়েছে। ওই সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য প্রচারণায় উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের একটি দল কাকচিড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন পল্টু ও রায়হানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাইনুল ইসলামের নেতৃত্বে সিএন্ডবি এলাকায় গিয়েছিল। এ সময় নুরুল ইসলাম মনি ৫ শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে সন্ত্রাসী স্টাইলে ওই সড়ক দিয়ে আসছিল। আমাদের নেতাকর্মীদের দেখেই তারা হামলা চালায়। এতে আমাদের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। এ সময় ওই এলাকার লোকজন হামলাকারী নুরুল ইসলাম মনির সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে এলাকাবাসীর প্রতিরোধে বিএনপি সেখান থেকে সটকে পড়ে।
জাবির হোসেন বলেন, নুরুল ইসলাম মনি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য এলাকা থেকে ১৭ বছর ধরে নির্বাসিত। এলাকার লোকজন তার ওপর ক্ষিপ্ত।
কাকচিড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন পল্টু বলেন, নুরুল ইসলাম মনি সন্ত্রাসের উদ্দেশ্যে ১৭ বছর পর আবার নির্বাসন থেকে এলাকায় এসেছেন। তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ওপর অ্যাটাক করে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। আমি স্থানীয়দের সহায়তায় কোনো মতে কুয়ায় ঝাঁপ দিয়ে প্রাণে বেঁচেছি। নুরুল ইসলাম মনিকে আমরা কিছুতেই এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে দেব না। আমরা প্রতিহত করব।
এ বিষয়ে জানতে নুরুল ইসলাম মনির মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, নুরুল ইসলাম মনি হামলায় আহত হয়েছেন। তবে মনি বরগুনায় অবস্থান করছেন এবং চিকিৎসা নিচ্ছেন বলেও জানান মামুন।
পাথরঘাটা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তোফায়েল হোসেন সরকার বলেন, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম মনির এলাকায় আগমনকে ঘিরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আমাদের ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা চিকিৎসাধীন