জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের বলেছেন, যেজন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে সমর্থন দেওয়া হয়েছিল তার বাস্তব প্রতিফলন ঘটেনি। এ সরকার ক্ষমতায় এসে যা করছে তা বিএনপির চেয়ে এক ডিগ্রি বেশি। আমরা এর পরিবর্তন চাই।
সোমবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
নির্বাচনে জোট গঠনের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমাদের নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটার ওপর আমাদের ভবিষ্যৎ রাজনীতির অস্তিত্ব নির্ভর করছে। তাই তৃণমূল থেকে দলের উচ্চপর্যায়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বিএনপির সঙ্গে গোপন আঁতাতের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা গোপন কোনো আঁতাত করি না, যা কিছু হবে স্বচ্ছ।’
বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের নীতিগত পার্থক্য থাকলেও তাদের কর্মকাণ্ড এক উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের মানুষ এদের বাইরে কাউকে চায় না। দেশের মানুষ সামাজিক নিরাপত্তা চায়। দেশের মানুষ খুন-ধর্ষণ-লুটপাট থেকে উদ্ধার চায়। আমরা আমাদের নিজস্ব রাজনীতি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। দেশের মানুষের সুস্থ রাজনীতি উপহার দিতে চাই।’
এরশাদের শাসনামলের কথা উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, ‘এরশাদের শাসনামলে এসব ছিল না। সংখ্যালঘুরা ভালো ছিল। দেশে সুশাসন ছিল। দুর্নীতি কম ছিল। আমরা তেমন সুশাসন নিশ্চিত করে দেশকে এগিয়ে নিতে চাই।’
দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। সামনে নির্বাচন। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত কিছুই বুঝতে পারছি না। নির্বাচনে সব দল অংশ নেবে কি না, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে কি না তা বুঝতে পারছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও বেশি নাজুক। দেশে প্রবাসী আয় কমে যাচ্ছে। যেখানে আমদানি ব্যয় বাড়ছে, রিজার্ভ কমে আসছে; সেখানে বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের যে ঋণ তার বোঝা দেশ কতটুকু বইতে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছি।’
জাতীয় পার্টিতে ভাঙনের বিষয়ে জিএম কাদের বলেন, ‘একটা দলে থাকলে অনেকেই নির্বাচন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরমধ্য থেকে আমরা একজনকে বেছে নেই। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে।’
পাঁচ দিনের সফরে ঢাকা থেকে দুপুর ১২টায় সৈয়দপুর বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান জিএম কাদের। পড়ে সড়কপথে রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছালে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান নেতাকর্মীরা।
এ সময় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মাসুদ নান্টু, সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক, মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসীরসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।