ফের পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিদুতের দাম বাড়লো। নির্বাহী আদেশে বেড়েছে এ দাম। এজন্য সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা হয়েছে প্রজ্ঞাপন। নতুন দাম কার্যকর হবে ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই।
খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ। পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য ৬ টাকা ২০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা ১০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাইকারি (বাল্ক) দাম সব কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রতিটি স্তরেই (২৩০, ১৩২ ও ৩৩ কেভি) কিলোওয়াট ঘণ্টায় বেড়েছে ৫০ পয়সা।
প্রজ্ঞাপনে গ্রাহকপর্যায়ে ৫ শতাংশ ও পাইকারিতে ৮ শতাংশ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এ নিয়ে গত ১৪ বছরে ১২ বারের মতো গ্রাহকপর্যায়ে বাড়ল বিদ্যুতের দাম। এ ছাড়া ১৪ বছরে এটি ছিল ১১ দফায় পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি।
প্রজ্ঞাপনে গৃহস্থালির খুচরা বিদ্যুতের ক্ষেত্রে ৫০ ইউনিট পর্যন্ত ৩ টাকা ৯৪ পয়সা থেকে চার টাকা ১৪ পয়সা করা হয়েছে। সাধারণ গ্রাহকের ক্ষেত্রে চার টাকা ৪০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে চার টাকা ৬২ পয়সা করা হয়েছে। ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত ছয় টাকা ১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ছয় টাকা ৩১ পয়সা, ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত ছয় টাকা ৩০ পয়সা থেকে ছয় টাকা ৯৯ পয়সা করা হয়েছে।
এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিট পর্যন্ত ছয় টাকা ৩৪ পয়সা থেকে ছয় টাকা ৯৯ পয়সা, ৪০১ থেকে ৬০০ পর্যন্ত ইউনিট ১০ টাকা ৪৪ পয়সা থেকে ২০ টাকা ৯৬ পয়সা এবং ষষ্ঠ ধাপে ৬০০ ইউনিটের ঊর্ধ্বে ১২ টাকা ৩ পয়সা থেকে ১২ টাকা ৩৬ পয়সা করা হয়েছে।
এর আগে গত ১২ জানুয়ারি দুই বছর পর খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম গড়ে ৫ শতাংশ বাড়ায় সরকার। এতে ইউনিটপ্রতি দাম বাড়ে ৩৫ পয়সা। নতুন এ দর জানুয়ারি থেকেই কার্যকর হয়। যার ফলে খুচরায় গ্রাহকপর্যায়ে গড়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ভাড়তি ৭ টাকা ৪৮ পয়সা দিতে হচ্ছে। এর মধ্যে আবার বাড়ল বিদ্যুতের দাম।
গত নভেম্বরে পাইকারি পর্যায়ে ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছিল বিইআরসি। এটি ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়।
এরপর ডিসেম্বর থেকেই খুচরা দাম বাড়াতে বিইআরসির কাছে আবেদন করে ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা। ৮ জানুয়ারি এসব আবেদন নিয়ে শুনানি করে বিইআরসি। এরপর ১২ জানুয়ারি খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়ানো হয়, যা ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিমাসে বিদ্যুতের খুচরা দাম নিয়মিত সমন্বয় করা হবে বলেও ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছিল।
দাম বাড়ানোর ক্ষমতা নিজেদের হাতে নিতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন সংশোধন করে গত ১ ডিসেম্বর অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। সংশোধনের সময় বলা হয়েছিল, বিশেষ পরিস্থিতিতে দাম বাড়াবে সরকার। এরপর জানুয়ারিতে প্রথমবারের মতো সরকার ওই ক্ষমতার প্রয়োগ করে।
আবার বাড়ানো নিয়ে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, প্রত্যেক মাসেই গ্যাস-বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করার কথা আমরা আগেই বলেছিলাম। আগামী মাসে বিদ্যুতের দাম আরেকবার সমন্বয় করতে হবে। আমাদের আর ভর্তুকি দেওয়ার সুযোগ নেই। এখন এভাবে সমন্বয়ের মধ্য দিয়েই যেতে হবে।