রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পাচ্ছে সাবেক বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার দল ‘তৃণমূল বিএনপি’। উচ্চ আদালতের আদেশের আলোকে নির্বাচন কমিশন এই নিবন্ধন দিতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান। এর আগে একাধিকবার নির্বাচন কমিশনে আবেদন করলেও যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়েছিল দলটি। আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসির নতুন দল নিবন্ধন প্রক্রিয়া এখন চলমান। এই প্রক্রিয়া শেষ করতে আরও কয়েকমাস লাগবে বলে জানিয়েছেন ইসি সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা।
২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চ ‘তৃণমূল বিএনপি’কে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে আদেশ দেন।
এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানান, আপিল বিভাগ থেকে সিদ্ধান্ত এসেছে। ‘তৃণমূল বিএনপি’কে নিবন্ধন দেওয়ার জন্য ইসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই ইসি বাধ্য। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ ইসির নেই। আদালতের রায়ের প্রেক্ষাপটে যত দ্রুত সম্ভব এই দলটিকে নিবন্ধন দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এই দলকে নিবন্ধন দিলে বিএনপির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে আলমগীর বলেন, এখানে ইসির কিছু বলার নেই। সর্বোচ্চ আদালত থেকে সিদ্ধান্ত এসেছে। আদালত তাদের প্রতীকও নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তাদের প্রতীক হবে ‘সোনালী আঁশ’। আদালতের নির্দেশের পর মাঠের হিসাব দেখার কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, যাচাই-বাছাই করে নিবন্ধন দেওয়ার ক্ষমতা ইসির। অন্যদিকে আদালতের নির্দেশ মানতে ইসি বাধ্য। আদালতের নির্দেশের পর এখানে যাচাই করার কোনো প্রয়োজন নেই। আদালত সার্বিক বিষয় বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
২০০৮ সালে দেশে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন পদ্ধতি চালু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৪৪টি দল নিবন্ধন পেয়েছে। তবে আদালতের আদেশ ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থ হওয়ায় এর মধ্যে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে চারটির নিবন্ধন বাতিল হয় কে এম নূরুল হুদা কমিশনের সময়ে। এছাড়া নিবন্ধন পাওয়ার পর স্থায়ী গঠনতন্ত্র জমা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এক বছরের মাথায় ফ্রিডম পার্টির নিবন্ধন বাতিল করা হয়।
এর আগে কে এম নূরুল হুদা কমিশনের সময় ৭৬টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছিল। এর মধ্যে কোনও দলই ইসির চূড়ান্ত বিবেচনায় নিবন্ধন পায়নি। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে দলগুলোর মধ্যে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম ও বাংলাদেশ কংগ্রেস উচ্চ আদালতের নির্দেশে নিবন্ধন পায়। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, এনডিএমকে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন দেয় ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। বাংলাদেশ কংগ্রেস ইসির নিবন্ধন পায় ২০১৯ সালের ৯ মে।