ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হাইওয়ের রেলিংয়ে ধাক্কা লেগে অ্যাম্বুলেন্সে আগুন ধরে ঘটনাস্থলেই নিহত সাত যাত্রীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
নিহতরা হলেন- বোয়ালমারীর ফেলাননগর গ্রামের আজিজার শেখের স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৫০), মেয়ে কমলা (৩০) ও আলফাডাঙ্গার বিউটি (২৬), নিহত কমলার ছেলে আরিফ (১২), আফসা (১), এবং হাসিব (১০) এবং নিহত বিউটির ছেলে মেহেদী (১০)।
নিহতরা সবাই ফরিদপুরের বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা।
এ ঘটনায় আহত চালক হলেন মৃদুল মালো (২৫)। তিনি ফরিদপুর শহরের গুহলক্ষ্মীপুর এলাকার তকি মোল্যা সড়কের সুভাষ চন্দ্র মালোর ছেলে।
তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শরীরের বেশি অংশ পুড়ে যাওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করা হয়েছে।
শিবচর হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল্লাহ হেল বাকী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, নিহতদের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা ঢাকা থেকে ফরিদপুরে গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন। একই পরিবারের সদস্য সবাই।
শনিবার (২৪ জুন) বেলা ১১ টার দিকে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা অ্যাম্বুলেন্সটি মালিগ্রাম এলাকায় এসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের রেলিংয়ে ধাক্কা লাগলে এতে আগুন ধরে যায়। মুহূর্তে আগুন ছড়িয়ে পড়লে চালক ছাড়া ভেতরে থাকা কেউ বের হতে পারেননি।
এ দুর্ঘটনায় মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় ২ ঘণ্টা পর্যন্ত যান চলাচল স্থবির ছিল। এর মধ্যে সংযোগ সড়ক দিয়ে কিছু কিছু যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করে হাইওয়ে পুলিশ। দুপুর দেড়টার দিকে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ফায়ার সার্ভিস ভাঙ্গা স্টেশনের ইনচার্জ আবু জাফর বলেন, খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। এসময় গাড়িটি জ্বলছিল। ভেতরেই নারী-শিশুসহ ৭ জন মারা গেছে। গাড়িটির সামনের অংশে আগুন ধরে গিয়েছিল। রেলিংয়ে ধাক্কা লেগেই আগুন ধরে যায়। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে গাড়ির ভেতর থেকে সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
হাইওয়ে পুলিশের ফরিদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার মাহবুব আলম বলেন, প্রাথমিক ধারণা অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের ডিভাইডারের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে এতে আগুন ধরে যায়। চালকের পাশের জানালাটি খোলা ছিল। এছাড়া সব জানালা আটকানো ছিল। চালক রক্তাক্ত অবস্থায় বের হয়ে এলে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। আটকেপড়া ৭ জনেরই মৃত্যু হয়।