মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষকদের আন্দোলন অব্যাহত আছে। ২১ দিন লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন শেষে আজ মঙ্গলবার (১ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেছেন শিক্ষকরা।
আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ বলেছেন, জাতীয়করণ শিক্ষকদের আজকের দাবি নয়। আমরা দীর্ঘদিন যাবত এ দাবি জানিয়ে আসছি। আমরা চাই, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমাদের দাবি তুলে ধরতে।
তিনি বলেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এটি আমাদের রুটি-রুজির বিষয়। আজ আমাদের আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথেই থাকব। প্রয়োজনে রাজপথেই মারা যাব। তবুও প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ ছাড়া আমরা স্কুলে ফিরে যাব না।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ডাকে গত ১১ জুলাই থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা। এর আগে ১৯ জুলাই আন্দোলনরত শিক্ষক ও সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
সেখানে শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, এ বিষয়ে (জাতীয়করণ) আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ নেই। জাতীয়করণের যৌক্তিকতা আছে কি নেই, সেটাসহ শিক্ষা ও শিক্ষকদের সার্বিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে দুটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি, জানিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা।
এদিকে, জাতীয়করণের বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের নিয়ে গত ২৭ ও ২৮ জুলাই গাজীপুরে একটি কর্মশালার আয়োজন করলেও আন্দোলনকারী শিক্ষকনেতারা তাতে যোগ দেননি। আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বলছেন, অভিভাবক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পাওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ও শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাবেন না।
গত সপ্তাহে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষকদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছিলেন, শিক্ষকদের আন্দোলনের পেছনে অবশ্যই উসকানি আছে। যারা জনগণকে সম্পৃক্ত করে কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারছে না, তারা একেক সময় একেক দল, গোষ্ঠীর ওপর সওয়ার হচ্ছে। শিক্ষক আন্দোলনের ওপর সওয়ার হয়ে আন্দোলনকে একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা তাদের থাকতেই পারে।
শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া হিসেবে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) সভাপতি অধ্যক্ষ বজলুর রহমান মিয়া বলেন, আমরা কারো উসকানিতে এখানে আসিনি। মূলত, শিক্ষামন্ত্রীর একেক সময়ের একেক বক্তব্য আমাদের উসকে দিচ্ছে৷ এ কারণে আমাদের এখানে অবস্থান করতে হচ্ছে। যতই হুমকি আসুক, আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরব না।
একাধিক নির্দেশনা উপেক্ষা করে আন্দোলনে শিক্ষকরা:
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার যথাযথ পরিবেশ এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিতে একাধিক নির্দেশনা দেয় শিক্ষা বোর্ড ও অধিদপ্তর। গ্রীষ্মের ছুটি বাতিল করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নির্দেশনায় অনুপস্থিত শিক্ষক-কর্মচারীদের ব্যাপারে গভর্নিং বডি ও প্রধান শিক্ষককে কঠোর হতে বলা হয়েছে।