রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশের ভোট নিয়ে সরগরম ভারতীয় মিডিয়া

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এগিয়ে আসায় সরগরম হয়ে উঠেছে ভারতের গণমাধ্যম। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক, নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব, যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক এবং এই অঞ্চলে চীনের প্রভাব ও নয়াদিল্লির কৌশল নিয়ে চলছে নানামুখী বিশ্লেষণ।

নয়াদিল্লির কূটনৈতিক পাড়ার বিভিন্ন মন্তব্য নিয়ে ভারতের প্রভাশালী গণমাধ্যমগুলো বিশ্লেষণ করছে আঞ্চলিক নানা ইস্যু। যেখানে চীনের প্রভাব কমানো এবং ভারতের আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়টি ঘুরেফিরে আসছে। আবার কৌশলগত কারণে এই অঞ্চলে নজর রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। দেশটির নীতি বাংলাদেশের নির্বাচনে সরাসরি প্রভাব ফেলছে বলেও নয়াদিল্লির বরাতে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে।

‘বাংলাদেশকে দুই বার্তা’

আগামী মাসে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জি-২০ সম্মেলনে অংশ নেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সম্মেলনে বাংলাদেশের উদ্দেশে ভারত দুটি স্পষ্ট বার্তা পাঠাতে চায় বলে সোমবার দ্য টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থার একটি সূত্রের বরাতে দেবদীপ পুরোহিতের লেখা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ভারতের বার্তা স্পষ্ট- নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হতে হবে এবং আওয়ামী লীগকে সব চীনপন্থী ও ইসলামপন্থী নেতাদের বাদ দিয়ে অসাম্প্রদায়িক ও জনপ্রিয় প্রার্থীদের মনোনয়ন দিতে হবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হাসিনার জন্য এই জোড়া বার্তা নির্বাচনের বিষয়ে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঐকমত্যের ইঙ্গিত দেয়।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে ধারাবাহিক আলোচনা হয়েছে। এসব বৈঠক ভারত ও এই অঞ্চলের অন্য কয়েকটি দেশে অনুষ্ঠিত হয়।

অতীতে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বড় ধরনের মতপার্থক্য ছিলো, যেমনটা দেখা গেছে ২০১৮ সালে। তবে এবার তারা ঐকমত্যে পৌঁছেছে বলে মনে হচ্ছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ সম্মেলনের জন্য দিল্লি গেলে তাকে এ দুটি বার্তা পৌঁছে দেয়া হবে বলে সূত্রটি বলেছে।

ক্ষতি কোথায়

এদিকে, ২০ আগস্ট ভারতের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য হিন্দুর সাময়িকী ফ্রন্টলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনে শেখ হাসিনার পরাজয় হলে দীর্ঘ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার মুখোমুখি হতে পারে বাংলাদেশ।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের চাপিয়ে দেয়া রাজনৈতিক সংকট থেকে বাংলাদেশকে মুক্তি দেয়ার জন্য ভারতের ওপর চাপ বাড়ছে। নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনাকে কোণঠাসা করতে উৎসাহিত হচ্ছে তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা, বিশেষ করে ইসলামপন্থী মৌলবাদী দলগুলো।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা থেকে বিদায় কেবল ভারতের জন্য উদ্বেগজনক নয়, এতে দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহিংসতা ও অস্থিরতা বৃদ্ধিরও আশঙ্কা রয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

সাংবাদিক প্রণয় শর্মার লেখা ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারতবিরোধী অনুভূতি এবং আনুগত্যের অভাবপূর্ণ এই অঞ্চলে শেখ হাসিনা সরকার সম্ভবত ভারতের সবচেয়ে কাছের এবং একমাত্র নির্ভরযোগ্য বন্ধু। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে স্বীকৃত ভারতের অবস্থান সাম্প্রতিক সময়ে চীনের কাছ থেকে হুমকির মুখে পড়েছে, এই অঞ্চল নিয়ে দেশটির আগ্রহ দিন দিন জোরদার হচ্ছে।

ওয়াশিংটনের ভূমিকায় খুশি নয় দিল্লি

এর আগে, গত ১৮ আগস্ট আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দুর্বল হলে তা ভারত বা যুক্তরাষ্ট্র কারও পক্ষেই সুখকর হবে না বলে মনে করে নয়াদিল্লি। বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ভূমিকায় ভারত যে খুশি নয়, ওয়াশিংটনকে পৌঁছে দেয়া হয়েছে সেই বার্তাও।

অগ্নি রায়ের লেখা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নয়াদিল্লির বক্তব্য, ঢাকায় সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হোক এটা ওয়াশিংটনের মতো ভারতও চায়। কিন্তু যেভাবে হাসিনা সরকারকে অস্থির করার জন্য আমেরিকার তরফ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে, তা প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ইতিবাচক নয়।

আনন্দবাজার পত্রিকা আরও লিখেছে, শুধুমাত্র বাংলাদেশের জন্য আলাদা একটি ভিসানীতি ঘোষণা করেছে বাইডেন প্রশাসন। নয়াদিল্লির কূটনৈতিক শিবির মনে করছে, সরাসরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলাতেই নিজের দেশের আইন প্রয়োগ করে সে দেশের জন্য আলাদা ভিসানীতি গ্রহণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

আলোচনা আরও গভীর হবে

সর্বশেষ, জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদেরের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের ভারত সফরের প্রেক্ষাপটে সোমবার আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য হিন্দু। সেখানে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদলকে আতিথ্য দেয়ার পর ঢাকার রাজনৈতিক মহলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়িয়েছে ভারত।

কল্লোল ভট্টাচার্যের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় পার্টির এই প্রতিনিধিদলের ভারত সফরে আসাটা তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, ভারত আসন্ন জি-২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আতিথ্য দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। এই সম্মেলনে বাংলাদেশকে ‘অতিথি দেশ’ হিসেবে ইতোমধ্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

দ্য হিন্দু বলছে, সামনের দিনগুলোতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের আলোচনা আরও গভীর হবে। কারণ, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে যাবেন। ব্রিকসের সদস্যপদ চাইছে, এমন কয়েকটি দেশ এই সম্মেলনে অংশ নিতে যাচ্ছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।

Facebook
X
WhatsApp
Email
Telegram
সর্বশেষ
ফেসবুক নেটওয়ার্ক ও পার্টনার পেজ
মিডিয়া
Cover for Table Talk Uk
595,824
Table Talk Uk

Table Talk Uk

Table Talk UK Discusses the political and social issues of the country. Our only purpose is to expose social inconsistencies and politics in the face of accountability on the path to democracy and talk about the rights of people.

This message is only visible to admins.
Problem displaying Facebook posts. Backup cache in use.
PPCA Error: Due to Facebook API changes it is no longer possible to display a feed from a Facebook Page you are not an admin of. The Facebook feed below is not using a valid Access Token for this Facebook page and so has stopped updating.

Smash Balloon Custom Facebook Feed WordPress Plugin The Custom Facebook Feed plugin

সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!
রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
কপিরাইট © 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত — লন্ডন মিরর।
সম্পাদক: হাসিনা আক্তার
সার্চ করুন
লগইন/সাইন আপ
সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!