উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারকে পুনরায় ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানানো জামালপুরের জেলা প্রশাসক মো. ইমরান আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।
ঘটনার সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে জামালপুরের জেলা প্রশাসককে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো রকম নির্বাচনী দায়িত্ব দেয়া উচিৎ হবে না বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনের আগে জেলা প্রশাসকদের এ ধরনের আচরণ থেকে বিরত থাকতে সতর্কবার্তা দেয়া প্রয়োজন বলেও ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন মনে করছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় কাছাকাছি চলে আসায় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ‘পক্ষপাতহীন’ ও ‘নিরপেক্ষ’ আচরণ করতে হবে।
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনে সরকারী পরিচালক (জনসংযোগ) আশাদুল হকের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সোমবার জামালপুরের মাদারগঞ্জ পৌরসভার নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আমাদের অনেক কষ্টে অর্জিত এই স্বাধীনতা, স্বাধীনতার সুফল যোগাযোগ ও উন্নয়ন। এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। যে সরকার এই উন্নয়ন করেছে এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আবার পুনরায় নির্বাচিত করে ক্ষমতায় আনতে হবে। এটা হবে আমাদের প্রত্যেকের অঙ্গীকার।’
ওই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসকের ওই বক্তব্য নিয়ে আলোচনার মধ্যে নির্বাচন কমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘ঘটনার সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে জামালপুরের জেলা প্রশাসক জনাব মো: ইমরান আহমেদ এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে পত্র দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
‘সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যে, জামালপুরের জেলা প্রশাসক জনাব মো: ইমরান আহমেদ স্থানীয় সংসদ সদস্য জনাব মির্জা আজমের উপস্থিতিতে জনবহুল এক সভায় বক্তব্য রেখেছেন। বক্তব্যে তিনি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ সরকারকে পুনরায় নির্বাচিত করে ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য মির্জা আজমকে আগামী নির্বাচনের পর মন্ত্রী হিসাবে দেখার আশা প্রকাশ করেছেন।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তার বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রশাসনের কর্মকর্তাগণকে পক্ষপাতহীন নিরপেক্ষ আচরণ করতে হবে। নির্বাচন বিষয়ে কমিশনের এখতিয়ার কেবল তফশিল ঘোষণার পর নয়, সকল সময় বিদ্যমান থাকে।
নির্বাচনের সময় জেলা প্রশাসকরাই সাধারণত রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া নির্বাচনের সময় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করে থাকেন তারা।
ইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘সরকার, গণতন্ত্র, নির্বাচন ব্যবস্থা এবং নির্বাচন কমিশনের উপর জনমানুষের আস্থা অক্ষুণ্ণ রাখার স্বার্থে জনাব মো: ইমরান আহমেদকে, উক্ত ঘটনার সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে, জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনরূপ নির্বাচনী দায়িত্ব প্রদান করা থেকে বিরত রাখা সমীচীন হবে এবং একই সাথে জেলা প্রশাসকগণকে এ ধরনের আচরণ থেকে বিরত থাকতে সতর্কবার্তা দেয়া প্রয়োজন মর্মে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।’