রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান প্রচেষ্টা আরও বহুগুণ বাড়াতে বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সদরদপ্তরে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আয়োজিত একটি উচ্চ পর্যায়ের সভায় প্রধানমন্ত্রী দুর্দশাগ্রস্ত মানুষগুলোর জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার কথা বলেন।
সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পাঁচটি ক্ষেত্রে সহায়তা বাড়াতেও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।
বিশ্ব রাজনীতির প্রধানতম মঞ্চ জাতিসংঘ। আর ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনকে ঘিরে এখন রীতিমতো সরগরম, নিউইয়র্কে অবস্থিত বিশ্ব সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও গুরুত্বপূর্ণ এই অধিবেশনে প্রতিদিনই অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন কর্মসূচিতে। বৃহস্পতিবার, জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ‘ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ’ বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেন তিনি।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী অথচ অর্জনযোগ্য এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা। তিনি উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মহামারি ব্যবস্থাপনায় বিশ্বের অন্যতম সেরা দেশ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবস্থাসহ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরেন তিনি। সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ নিশ্চিতে পাঁচটি ক্ষেত্রে সহায়তার কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রজন্ম ইউএইচসি সমুন্নত করে ইতিহাস পরিবর্তন করতে পারে। আসুন আমরা সবাই হাতে হাত মিলিয়ে তা সম্ভব করে তুলি। বাংলাদেশে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আমাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মহামারি ব্যবস্থাপনায় বিশ্বের অন্যতম সেরা দেশ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।
এদিকে এদিন বাংলাদেশ, কানাডা, গাম্বিয়া, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের আয়োজনে রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ে ‘তারা কি আমাদের ভুলে গেছে?’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের আরেকটি ইভেন্টে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। সংকট সমাধানে চারটি প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গত ছয় বছরে একজন বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাও মিয়ানমারে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারেনি। বাংলাদেশে তাদের দীর্ঘ উপস্থিতি কেবল তাদের আরও হতাশার দিকেই ঠেলে দিচ্ছে না, এটি কক্সবাজারের পরিস্থিতিকেও অনিশ্চিত করে তুলছে।
রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনে সম্মিলিত প্রচেষ্টা আরও বহুগুণ বাড়াতে বৈশ্বিক সম্প্রদায় প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সমস্যাটির মূলে গিয়ে সমাধান করতে হবে, যা মিয়ানমারেই রয়েছে। আমি অন্য সব সদস্য রাষ্ট্রকে এই বিষয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থার সাথে সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানাই।