মুখে গামছা বেঁধে ও হাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে কুমিল্লার লাকসামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আসা মানুষদের ওপর হামলা চালানোর ঘটনা ঘটেছে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল মান্নানের। তার বাড়ি ও ব্যক্তিগত অফিসেও হামলা-ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আব্দুল মান্নানের সমর্থিত আওয়ামী লীগ কর্মী মো. ফারুক, রাশেদ, শাহজাহান, মনির হোসেনসহ অন্তত ৭-৮ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে লাকসাম পৌরসভার আব্দুল মান্নানের বাড়ির পাশে গাজীমুড়া কামিল মাদ্রাসা মাঠ ও পাশের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে এলাকাবাসীর উদ্যোগে লাকসামের গাজীমুড়া কামিল মাদ্রাসা মাঠে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। বিকালে অনুষ্ঠানস্থলে যান উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। ওই সময় তিনি অনুষ্ঠানের অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে গেইট বন্ধ করে রাখার নির্দেশ দেন। এ নিয়ে আয়োজকদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা ও সংঘর্ষ হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার পাশের একাধিক বাসিন্দা জানান, ঘটনার সময় গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রতিপক্ষকে কুপিয়েছে কয়েকজন যুবক। এ সময় অনুষ্ঠানে আসা লোকজন অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে আত্মরক্ষার্থে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আশপাশের বাসিন্দাদের মাঠে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুল মান্নানের লোকজন মাঠে অনুষ্ঠান করতে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়নি। তাই তাদের অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে রুবেলসহ আমাদের দুই-তিন জন কর্মী আহত হয়েছেন। ঘটনার সময় আব্দুল মান্নান তার পকেট থেকে পিস্তল বের করে গুলি করতে চেয়েছিল। এতে পরিস্থিতি জটিল হয়।
তবে আব্দুল মান্নান জানান, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমের উপস্থিতিতে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা শিহাব, রাসেল ও স্বাধীনের নেতৃত্বে তাদের সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে অনুষ্ঠানে আসা লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ৭-৮ জনকে গুরুতর আহত করা হয়। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে মাথায় ও হাতে-পায়ে কোপের আঘাতে গুরুতর আহত মনির হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তিনি আরও জানান, হামলাকারীরা ঘটনাস্থলের অদূরে তার বাড়িতে এবং দৌলতগঞ্জ বাজারে তার ব্যক্তিগত অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে এবং অফিস ও অনুষ্ঠানস্থলের চেয়ার-টেবিল নিয়ে যায়। তিনি ঘটনার সময় পকেটে লাইসেন্স করা পিস্তল থাকলেও তা বের করার বিষয়টি অস্বীকার করেন।