২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে সংঘটিত সংঘর্ষের ঘটনা পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতারও দাবি জানিয়েছে তারা। বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে সমর্থন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়া সহিংসতার মধ্যে পুলিশ ও রাজনৈতিক কর্মী হত্যা এবং বাস ও হাসপাতালে আগুন দেওয়াকে অগ্রহণযোগ্য বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিং থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
এছাড়া বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে সমর্থন ও এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সময় সোমবার (৩০ অক্টোবর) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক ম্যাথিউ মিলারের কাছে গত ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতার বিষয়ে জানতে চান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিরোধীদের মহাসমাবেশে হামলা এবং সহিংসতা সম্পর্কে আমরা গত সপ্তাহান্তে আপনার বক্তব্য দেখেছি। এই সহিংসতা মূলত পুলিশ দিয়ে এবং ইন্টারনেট বন্ধ করে সমাবেশ শুরু হওয়ার আগেই সংঘটিত হয়। আর এরপর থেকে পুলিশ প্রধান বিরোধীদল বিএনপির মহাসচিবসহ শতাধিক বিরোধী রাজনীতিক, বিরোধী দলের নেতাদের পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা দায়ের করেছে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে এর প্রতিক্রিয়া জানাবে?
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় যে রাজনৈতিক সহিংসতা হয়েছে আমরা তার নিন্দা জানাই। একজন পুলিশ সদস্য, একজন রাজনৈতিক কর্মীকে হত্যার ঘটনা এবং হাসপাতাল ও বাসে আগুন দেওয়া অগ্রহণযোগ্য। সাংবাদিকসহ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতাও অগ্রহণযোগ্য। ২৮ অক্টোবরের সমাবেশে যেসব ঘটনা ঘটেছে তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত এবং সহিংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি করতে আমরা কর্তৃপক্ষকে উৎসাহিত করছি। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব সবার। ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যম; সবারই এই দায়িত্ব রয়েছে।
পরে ওই সাংবাদিক ঢাকায় মার্কিন কূটনীতিকদের ওপর সরকারের গুপ্তচরবৃত্তি নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে, সরকারপন্থি গণমাধ্যম ও তাদের সমর্থকরা বিরোধী রাজনৈতিক নেতা এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সমালোচনা করেছে। এই প্রতিবেদনগুলোতে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, সরকার মার্কিন কূটনীতিকদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করছে। আপনারা কি বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন কূটনীতিকদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করার অনুমতি দিচ্ছেন?
জবাবে মিলার বলেন, আমি শুধু বলব, কূটনীতিকরা বিভিন্ন ধরনের ও বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের সঙ্গে কথা বলে থাকেন। এর মধ্যে সুশীল সমাজ ও সংস্থা, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ী নেতা, সাংস্কৃতিক কর্মী, শিক্ষাবিদসহ অন্যান্য অনেক ধরনের সংস্থা এবং ব্যক্তিও রয়েছেন। কূটনীতিকরা তাদের দৈনন্দিন কাজের অংশ হিসেবেই এটি করেন এবং আমরা সেটি চালিয়ে যাবো।