লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের শূন্যপদে উপনির্বাচনে ব্যালট বইয়ে অনবরত নৌকা মার্কায় সিল মারার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ৫৭ সেকেন্ডে ৪৩ ব্যালটে নৌকা মার্কার সিল মারেন তিনি।
রোববার ভোটগ্রহণ চলাকালে চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি আজাদ হোসেন সিলগুলো মারেন। এতে নৌকার অন্য এক কর্মী তাকে সহযোগিতা করেন। তবে তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
সোমবার সকাল থেকে ৫৭ সেকেন্ডের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে নৌকা প্রতীকের একটি গানজুড়ে দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আজাদ নির্বাচনী এলাকার সদর উপজেলা দিঘলী ইউনিয়নের দক্ষিণ খাগুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন। ভিডিওতে তার গলায় নৌকার কার্ডও ঝুলতে দেখা যায়। ভোট কক্ষের বেঞ্চে বসে একটি ব্যালট বইয়ের পাতা উল্টিয়ে একাধিক সিল মারেন আজাদ।
ভিডিওতে দেখা গেছে, খুব দ্রুত তিনি সিল মারছেন। এ সময় তাকে অন্য একজন সহযোগিতা করেন। ৫৭ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায় প্রায় ৪৩টি ব্যালটে তিনি নৌকা প্রতীকে সিল মেরেছেন।
আজাদ চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। সম্প্রতি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করে জেলা ছাত্রলীগ।
চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি আজাদ হোসেন বলেন, আমার ভোট দিয়েই আমি কেন্দ্র থেকে চলে এসেছি। ভিডিওর বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। ভিডিওটি দেখলে বলতে পারব। তবে নৌকা মার্কায় সিল মারার বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সম্প্রতি আজাদকে ছাত্রলীগের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতেই প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মেরেছে। এরা দলের জন্য বিপজ্জনক। তবে ভিডিওটি আমি দেখিনি। বিস্তারিত কিছু জানা নেই।
লাঙ্গলের প্রার্থী জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রাকিব হোসেন বলেন, ক্ষমতাসীনরা কেন্দ্রে প্রভাব খাটিয়ে জালভোট দিয়েছে। নৌকায় সিল মারার ভিডিওটি তার বড় প্রমাণ। জালভোটসহ বিভিন্ন অভিযোগে আমি নির্বাচন চলাকালীন ভোট বর্জন করেছি। দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন বলেন, ভিডিওটি আমার নজরে পড়েনি। সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ ব্যাপারে কেউ যদি অভিযোগ করে তাহলে ট্রাইব্যুনালে যেতে হবে। আর ইতোমধ্যে আমরা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করে দিয়েছি।