মিয়ানমারের ১৪ জন চিকিৎসাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির জান্তা সরকার। তাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য, এমন রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। ক্ষমতাসীনদের সমর্থিত একটি সংবাদমাধ্যমে গত বুধবার এমন তথ্য জানানো হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত সোমবার মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় কায়া রাজ্যের লইকাও এলাকার একটি গির্জায় অভিযান চালিয়ে ওই চিকিৎসাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৪৮ জন রোগীকে চিকিৎসা দিচ্ছিলেন।বিজ্ঞাপন
জান্তা-সমর্থিত পত্রিকা গ্লোবাল নিউ লাইটের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সন্ত্রাসী সংগঠনের আহত সদস্য ও অসুস্থ ব্যক্তিদের অনানুষ্ঠানিকভাবে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার সময়ে ওই চিকিৎসাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তবে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে কোনো সংগঠনের নাম স্পষ্ট করে বলা হয়নি। শুধু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই ১৮ চিকিৎসাকর্মীকে সুনির্দিষ্ট আইন অনুযায়ী বিচারের আওতায় আনা হবে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সু চির সরকারকে সরিয়ে জান্তা ক্ষমতা দখল করার পর থেকে মিয়ানমারের স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়েছে। নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন চিকিৎসাকর্মীরা। এমনকি তাঁরা জান্তাবিরোধী আন্দোলনেও অংশ নেন।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, মিয়ানমারের স্বাস্থ্যকর্মীরা নিরাপত্তা বাহিনীর নিশানায় পরিণত হয়েছেন। যদিও সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের কাজে ফিরতে অনুরোধ করা হয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারে ১ হাজার ৩০০ সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন ১০ হাজারের বেশি নাগরিক। অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) নামের একটি সংস্থা এ তথ্য জানায়।
জাতিসংঘও এএপিপির এই পরিসংখ্যানকে উদ্ধৃত করেছে। তবে মিয়ানমারের জান্তা সরকার এই প্রতিবেদনকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে। উল্টো গত সপ্তাহে জান্তা সরকারের এক মুখপাত্র দাবি করেছেন, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সংঘাতে ২০০ সেনাকে হত্যা করা হয়েছে।