আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামকে রেখে নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বিএনপি নেতারা নতুন এই প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছেন বলেও দাবি তার।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমার কাছে তথ্য আছে-তারেক রহমানকে যারা নেতা হিসেবে মানতে পারছেন না, তার নেতৃত্ব মানতে যাদের কষ্ট হচ্ছে, তারা এরই মধ্যে নির্বাচনে আসবে বলে আমরা জানি। নির্বাচনে আসার জন্য তারা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মও তৈরি করেছেন।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, আপনারা দেখেছেন, বিএনপির যে নেতৃত্ব, তা দলটির অনেকের পছন্দ না। যে কারণে তারা নতুন দল করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। আবার বিএনপিরও অনেকেই প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জেনেছি।
আগামী সাত জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঠিক করে তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সহিংস আন্দোলনে রয়েছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
বিএনপি অনেক নেতা এবং সাবেক সংসদ সদস্য বিভিন্ন দলে যোগ দিচ্ছেন অনেকে স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন। তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী এবং মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার বিএনপির সাবেক নেতা।
এদিকে, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান এবং জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মো. আবু জাফরকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
একরামুজ্জামান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তিনি নাসিরনগর উপজেলার বাসিন্দা এবং আরএকে সিরামিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। একরামুজ্জামান অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং নবম ও একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন।
এদিকে আরেক বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা শাহ মো. আবু জাফর গত ২০ নভেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে (বিএনএম) যোগ দেন। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তিনি। বিএনপি ত্যাগের আগ পর্যন্ত তিনি দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। আবু জাফর ফরিদপুর-১ সংসদীয় আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন।
সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, মানুষ যখন তাদের (বিএনপি) থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তারা নিশ্চিত যে নির্বাচনে আসতে পারবে না কোনোদিন। যে কারণে কুৎসা রটাচ্ছে, অবান্তর কথা বলে যাচ্ছে। এ কথাটা জোরের সঙ্গে বলতে পারি যে, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে, সঠিক সময়ই নির্বাচন হবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে চলে এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবাই নিজেদের প্রার্থীকে কীভাবে বিজয়ী করা যায়, সেগুলো নিয়ে চিন্তা করছেন। কে নির্বাচনে এলো না, বা কে কী বললেন, তা নিয়ে মানুষের কোনো উদ্বেগ নেই।
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে কি না, জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখবেন, সেটা আছে কি না। রাজনৈতিক দলগুলো তো প্রচার করবেই। সবাই প্রচারে নামবে। নিজেদের প্রার্থী নিয়ে তারা আনন্দ করবে, উৎসব করবে।
তিনি বলেন, তাদের যতগুলো নেতা কারাগারে, তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা আছে। তারা ভাঙচুর করেছেন। বাস জ্বালিয়েছেন, মানুষ পুড়িয়েছেন। এসব ঘটনা আমরা শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি ও গ্রেফতার হয়েছেন। এছাড়া তারা বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ড করেছেন। বিনা কারণে কাউকে ধরা হয়নি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো খবর পাইনি। আর নাশকতা কেবল বাংলাদেশের মানুষ না, বিশ্বের কোনো সভ্য দেশের মানুষ পছন্দ করে না। যতই নাশকতা করবে, ততই জনবিচ্ছিন্ন হবে।