দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘একতরফা’ উল্লেখ করে এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি তাদের বক্তব্য তুলে ধরে জাতিংঘের মহাসচিবের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। আজ রোববার পাঠানো সেই চিঠিতে দলটি বলেছে, একটি ‘ডামি’ নির্বাচন সামনে রেখে অগ্নিসংযোগসহ নাশকতার ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপির নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তার করাসহ দমন–পীড়ন চালানো হচ্ছে।
বিএনপির পক্ষে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরে চিঠিটি পাঠানো হয়। দলটি জানিয়েছে, আজ নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে চিঠি পৌঁছে দিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে দলটি আজ ঢাকায় জাতিসংঘসহ বিদেশি সব মিশনে ওই চিঠি দিয়েছে। আজ বিকেলে এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই চিঠি পড়ে শোনান রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপি তাদের চিঠিতে অভিযোগ করেছে, গত দুই মাস রাষ্ট্রযন্ত্রের পৃষ্ঠপোষকতায় বাস–ট্রেনে হামলা, অগ্নিসংযোগসহ নানা ধরনের নাশকতা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাংশকে ব্যবহার করে এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। এসব ঘটনায় বানোয়াট অভিযোগ এনে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিরোধী দলের আন্দোলন দমন করে সরকার প্রহসনের নির্বাচন করতে চাইছে।
এমন অভিযোগের ব্যাপারে যুক্তি দিতে গিয়ে বিএনপি বলেছে, ‘চলমান অগ্নিসংযোগের ঘটনায় একটি সুনির্দিষ্ট প্যাটার্ন লক্ষ করা যাচ্ছে। যার একমাত্র উপকারভোগী আওয়ামী লীগ ও তার অধীনস্থ রাষ্ট্রযন্ত্র। আর প্রধান ভুক্তভোগী বিএনপি।’
দলটি অভিযোগ করেছে, বিতর্কিত ২০১৪ ও ২০১৮ সালের দুটি নির্বাচনের মতো সরকার আবারও সহিংসতা ও কারচুপির প্রহসনের নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপিসহ বিভিন্ন দল ও জোট ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করছে। এসব দল তাদের আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে।
গত ২৮ অক্টোবর হামলা ও সংঘাতে কারণে ঢাকায় সমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে বিএনপি ও তাদের আন্দোলনের মিত্ররা হরতাল–অবরোধের কর্মসূচি পালন করছে। এখন তারা নির্বাচন বর্জন ও সরকারকে অসহযোগিতার আন্দোলনে জনমত গঠনে প্রচারপত্র বিতরণ ও গণসংযোগের কর্মসূচি পালন অব্যাহত রেখেছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের শরিক মিত্ররা এখন ভোটের মাঠে প্রচারণায় রয়েছে।
এমন পটভূমিতে নির্বাচন, সরকারের গ্রেপ্তার অভিযান ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব বরাবর চিঠি দিল বিএনপি। এই চিঠিতে দলটি ২৮ অক্টোবরের পর থেকে তাদের নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তার ও হত্যাকাণ্ডের পরিসংখ্যানও তুলে ধরেছে। বিএনপির পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত তাদের দলের ২৫ হাজার নেতা–কর্মীকে আটক করা হয়েছে। ২৭ জনকে হত্যা করা হয়েছে।