বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা থেকে দাম্মামগামী একটি ফ্লাইটের ককপিটের উইন্ডশিল্ডে (সামনের অংশের কাচ) ফাটল দেখা দেওয়ায় দুই ঘণ্টা পর সেটিকে আবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফেরত আনা হয়েছে।
শনিবার বিকেলে দাম্মামের উদ্দেশে রওনা দেয় বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি। এতে ২৮৫ জন যাত্রী ও ১২ জন ক্রু ছিলেন। তারা সবাই নিরাপদে আছেন। ফ্লাইটের ক্যাপ্টেন ছিলেন তানিয়া রেজা।
বাংলাদেশ বিমানের পরিচালক (প্রকৌশল) এয়ার কমডোর মোয়াজ্জেম হোসেন একাত্তরকে বলেন, ক্যাপ্টেন হঠাৎ করেই তার বাম পাশের উইন্ডশিল্ডে সূক্ষ্ম ফাটল দেখতে পান। তারপরই নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি ঢাকায় ফেরার সিদ্ধান্ত নেন।
তিনি আরও বলেন, এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছিলো। সাধারণত সাত-আট বছরের মধ্যে উইন্ডশিল্ডে ফাটল ধরে না। কিন্তু চার বছরের মাথায় এমন ঘটনা ঘটলো। বোয়িংকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
উইন্ডশিল্ডের ওয়ারেন্টি চার বছর ছিলো জানিয়ে বিমানের এই পরিচালক বলেন, চার বছর এক মাস অতিবাহিত হওয়ায় সেই সুবিধা পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ থাকায় আমরা সিঙ্গাপুর থেকে উইনশিল্ড কিনছি। সোমবার সেটি আমাদের হাতেআসবে। এর পর আট থেকে দশ ঘণ্টার মধ্যে উড়োজাহাজটি চলাচল উপযোগী করা যাবে।
বিমান সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা থেকে ওড়ার পর ফ্লাইটের ক্যাপ্টেন ককপিটের কাচে ফাটল দেখতে পেয়ে কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভারতের আকাশসীমা থেকে আবার ঢাকার পথ ধরেন।
বিমানের কর্মকর্তারা জানান, বিমান কেনার চার বছরের মাথায় সাধারণত এমন ঘটনা হওয়ার কথা না। তারা বোয়িংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এটা ম্যানুফাকচারিং ফল্ট না অন্য কোনো কারণে হয়েছে সেটাও জানার চেষ্টা চলছে।
এর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিমানের একটি বোয়িং ৭৩৭ এর ককপিটের কাচ ফেটে যাওয়ায় সেটি মালয়েশিয়ায় অবতরণ করানো হয়। একই বছরের আগস্টে দোহার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া আরেকটি বোয়িং ড্রিমলাইনার মাঝ আকাশে একই সমস্যার মুখোমুখি হলে সেটিকে ভারতের আকাশসীমা থেকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়।
উইন্ডশিল্ড ভেঙে গেলে উড়োজাহাজের ভেতরে চাপ কমে গিয়ে সেটি ভারসাম্যহীনতার মতো বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে পারে।
২০১৯ সালের মে মাসে চীনের সিচুয়ান এয়ারলাইন্সের একটি একটি এয়ারবাস- এ ৩১৯ উড়োজাহাজ ৩২ হাজার ফুট উপরে ওড়ার সময় সেটির উইন্ডশিল্ড ভেঙে যায়। বাতাসের প্রচণ্ড চাপে কো-পাইলট উড়োজাহাজের বাইরে অর্ধেক বেরিয়ে গিয়েছিলেন। পরে উড়োজাহাজটিকে চেংদু বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করাতে সক্ষম হন পাইলট। সেবার ১১৯ যাত্রীর কেউ আহত হননি।