ভারতের হিন্দু অধ্যুষিত উত্তর প্রদেশের শহর অযোধ্যায় উদ্বোধন হলো প্রায় ২ হাজার কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিত রামমন্দির। সোমবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মন্দির উদ্বোধনের পর হাতে পদ্মফুল নিয়ে পুজো করেন।
এরপর রামলালার বিগ্রহের সামনে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করেন নরেন্দ্র মোদী। পুজো শেষে তিনি জনসভার জন্য বেরিয়ে যান।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রামমন্দির উদ্বোধনের আগে আগে হেলিকপ্টার থেকে ফুল ছড়িয়ে দেওয়া হয় অযোধ্যার উপর।
এরপর রামমন্দিরে পৌঁছান নরেন্দ্র মোদী। হাতে পুজোর ডালা নিয়ে ধীরে ধীরে গর্ভগৃহের দিকে এগিয়ে যেতে দেখা যায় তাকে। এসময় মোদীর সঙ্গে ছিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত।
স্থানীয় সময় বেলা একটার কিছু আগে আগে রামমন্দিরের গর্ভগৃহে রামলালার বিগ্রহের চোখের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়।
পরে হাতে পদ্মফুল নিয়ে পুজো করতে বসেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। পঞ্চপ্রদীপে রামলালার আরতি করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এরইমধ্যে দিয়ে ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ সম্পন্ন হয় রামমন্দিরের। শঙ্খ-ঘণ্টাধ্বনিতে মুখরিত হয় অযোধ্যা।
জনসভায় যা বললেন মোদি
মন্দির উদ্বোধন পর জনসভায় মোদী বললেন, অনেক কথা বলার আছে। কিন্তু কণ্ঠ আমার অবরুদ্ধ। তার মন ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’র সেই মুহূর্তেই আটকে রয়েছে বলে জানালেন তিনি।
মোদী বলেন, বহু শতাব্দীর অপেক্ষার পর প্রভু রাম আমাদের মধ্যে এসেছেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদী জানান, রামলালা আর তাবুতে নয়, এ বার ‘দিব্য মন্দিরে’ থাকবেন।
উদ্বোধনের আগের রাতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর চিঠির জবাব দিতে গিয়ে ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’কে ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানান, এই অনুষ্ঠান দেশের উন্নয়নের যাত্রাকে নিয়ে যাবে নতুন উচ্চতায়।
মোদী রোববার রাতে এক্স হ্যান্ডেলে রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে লেখেন, অযোধ্যা ধামে রামলালার ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ উৎসবে শুভকামনার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আমার বিশ্বাস, এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে আরও সমৃদ্ধ করবে। এই অনুষ্ঠান দেশের উন্নয়নের যাত্রাকে পৌঁছে দেবে নতুন উচ্চতায়।
রামমন্দির উদ্বোধনের আগে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠি লিখে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মুর্মু। ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’র আগে পুরোহিতদের উপদেশ মেনে প্রধানমন্ত্রী ১১ দিন ধরে যে ‘ব্রতপালন’ করছেন, তার ভূয়সী প্রশংসাও করেন তিনি। রাষ্ট্রপতি শুভেচ্ছা বার্তায় লেখেন, ‘আপনি ১১ দিন ধরে যা ব্রতপালন করছেন, তা শুধু পবিত্র আচারই নয়, প্রভু শ্রীরামের প্রতি আত্মত্যাগ এবং তার কাছে আত্মসমর্পণ করাও।’
চিঠিতে মহাত্মা গান্ধীর কথাও উল্লেখ করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। লিখেছেন, ‘গান্ধীজিও ভগবান রামের বড় ভক্ত ছিলেন।’