সোমবার , ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. London Mirror Specials
  2. অন্যান্য
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খুলনা
  6. খেলা
  7. চট্রগ্রাম
  8. জেলার খবর
  9. ঢাকা
  10. তথ্য-প্রযুক্তি
  11. প্রবাসের কথা
  12. বরিশাল
  13. বাংলাদেশ
  14. বিনোদন
  15. ব্যাবসা-বাণিজ্য

শেষ মুহূর্তে গণেশ উল্টে দিতে পারেন ইমরান খান!

প্রতিবেদক
Newsdesk
ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪ ১১:৩৩ অপরাহ্ণ

পাকিস্তানের ইতিহাসে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কোনো প্রধানমন্ত্রীই পাঁচ বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারেননি। বিপরীতে ৭৬ বছর বয়সী দেশটির অর্ধেক সময় কেটেছে সরাসরি সামরিক শাসনে। এ কারণে দেশটির শাসনতন্ত্রে সেনাবাহিনীর শিকড় অনেক গভীরে বলেই ধরে নেয়া হয়।

যার ফলশ্রুতিতে, পাকিস্তানে আশি ও নব্বইয়ের দশকে পিপলস পার্টি এবং মুসলিম লিগ নওয়াজ ক্ষমতার মিউজিক্যাল চেয়ার ভাগাভাগি করে নিলেও নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি ছিল সেনাবাহিনীর হাতে। আবার এই দুই দলকে পিছু হটিয়ে দেশটির রাজনীতিতে ইমরান খানের উত্থানের পেছনেও সেনাবাহিনীর ভূমিকা ছিলো।

২০১৮ সালের নির্বাচনে ইমরানের দল পিটিআই যে যাদু দেখায়, তার যাদুকর ছিলো দেশটির সেনাবাহিনীই। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর নানা ইস্যুতে সেনাদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পরে ইমরান। ফলে তার গদিও নড়ে উঠে, ক্ষমতায় আসে মুসলিম লিগ-পিপিপি জোট। এখানে সেনাদের ভূমিকা ছিলো বলে মনে করা হয়।

সেনা কর্তৃত্ব ইমরানকে নির্বাচনের বাইরে রাখলেও তার প্রতি জনজোয়ার রুখতে পারেনি। ভোটের ফলে, পিটিআই-অনুসারী প্রার্থীরাই সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়েছেন। পিটিআই দাবি করছে, তাদের দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও বেশ কিছু আসনে তাদের প্রার্থীদের জোর করে হারিয়ে দেয়া হয়েছে।

তবে জনরায় যে ইমরান খানকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে বলেই মনে করেন দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আর এ কারণেই দেশটির আগামীর সরকার নিয়ে যথেষ্ট দ্বিধায় পড়েছে দেশটির সেনারা। পরিস্থিতি দেখে ঐক্যমত্যের সরকার গঠনের ডাক দিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান।

নওয়াজ শরীফের পাকিস্তান মুসলিম লিগের ওপর সেনার আস্থা রয়েছে। তারা চাইছে ক্ষমতায় আসুক দলটি। তবে যেহেতু কোনো পার্টিই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি, সেক্ষেত্রে নওয়াজ এবং বিলওয়াল ভু্ট্টো জোট সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এনিয়ে ব্যাপক দর কষাকষিও চলছে।

তবে জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী হতে নারাজ নওয়াজ শরীফ। আবার পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল মুনীরও জোট সরকার গঠনের সবুজ সংকেত দিয়েছেন। একই সঙ্গে বিকল্পও ঠিক করে রেখেছে তারা। যদি শেষ মুহূর্তে নওয়াজ-বিলওয়াল সমঝোতা না হয় তাহলে আবার দৃশ্যপটে হাজির হবের ইমরান খান।

কথায় আছে, পাক সেনা যাদের মাথায় হাত রাখে, সে দলই ক্ষমতায় বসে। আবার এমন কথাও চালু আছে, তারা যেমন কোনো যুদ্ধ জেতেনি, তেমনই হারেনি কোনো নির্বাচনে। এবারও সেই ভূমিকা থেকে সেনারা সরে যাবে বলেও মনে করছেন না কেউ। কারা ক্ষমতায় আসবে, তা এবারও ঠিক করে দেবে সেনারা।

নওয়াজকেই যে সেনা প্রধান আসিম মুনীর ইসলামাবাদের মসনদে দেখতে চান, তা আর গোপন নেই। তবে এই পরিকল্পনায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন ইমরান। ফল থেকে স্পষ্ট, দেশেটির বেশিরভাগ মানুষই চাইছেন যে  কারাবন্দি ইমরান খানই আবারও প্রধানমন্ত্রী হোক। আর এই বিষয়টিই ভাবাচ্ছে সেনাবাহিনীকে।

এই মুহূর্তে জনরায়কে উপেক্ষা করতে চাইছে না সেনা কর্তৃত্ব। তাহলে করণীয় কী, তাদের সামনে আরেকটি পথ হলো ইমরান খানের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা, অথবা তাদের সবচেয়ে কম আস্থাভাজন পিপিপি নেতা বিলওয়াল ভুট্টো জারদারির সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো।

সামগ্রিক পরিস্থিতিতে হাল ছাড়তে নারাজ ইমরান খান। হারা ম্যাচে নিজেদের দিকে ঘোরাতে পিটিআই চেয়ারম্যান গওহর খান জানিয়েছেন, অন্যান্য ছোট দলগুলোর সঙ্গে জোট বাঁধতে পারেন তারা। ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছতে তাই প্রয়োজনীয় আসন জোগাড়ে মরিয়া পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি।

পিএমএলএন এবং পিপিপির মধ্যে অটুট বন্ধন স্থির হয়ে গেলে তারা মাওলানা ফজলুর রহমানের জমিয়তে উলেমায়ে ইসলামকে (জেইউআইএফ) কাছে ডাকতে পারে। এই দলটি একটি জোট করে অন্যান্য ছোট দলগুলোকে বার্তা পাঠাবে। ফলে সংরক্ষিত আসনেও নিজেদের লোক পেয়ে যাবে পিটিআই।

তবে গুঞ্জন উঠেছে, ইমরান ও অন্যান্য নেতা-কর্মীদের মুক্তির জন্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেন-দরবার করছে পিটিআই। জিও নিউজ জানাচ্ছে, পিটিআইয়ের শীর্ষ নেতা ব্যারিস্টার গওহর খান দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান ও কারাগারে আটক অন্যান্য নেতাকর্মীদের মুক্তির জন্যে আহবান জানিয়েছেন।

জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের এক বক্তব্যের পরপরই এই আহবান জানান পিটিআই নেতা। সব গণতান্ত্রিক শক্তির সমন্বয়ে ঐক্যের সরকার গঠনের আহবান জানান জেনারেল মুনির। ধারণা করা হচ্ছে, এমন আহবানের পেছনে পিটিআই যোগসূত্র থাকতে পারে।

গহওর আরও জানান, পিটিআইয়ের ম্যান্ডেটকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে দেশে কোনো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে না। এর মানে জোট সরকার নয়। সমন্বিত সরকার বলতে, প্রতিটি দলকে একটি বিষয়ে একমত হতে হবে যে, তারা জনগণের ম্যান্ডেটকে সবার আগে সম্মান করবে।

তিনি আরও বলেন, দেশ, গণতন্ত্র এবং অর্থনীতির স্বার্থে পিটিআই সামনে এগিয়ে যেতে চায়। প্রয়োজনে তারা জাতীয় পরিষদের অন্য সব দলের সাথে সংলাপে বসতেও প্রস্তুত বলে জানান গওহর খান। একই সঙ্গে তিনি নওয়াজের পেছনে কারা সাহস জোগাচ্ছেম সেই প্রশ্নও তুলেছেন বেশ জোরেশোরে।

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক

আপনার জন্য নির্বাচিত