সশস্ত্র বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশ আশ্রয় নেওয়া সে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপিসহ বিভিন্ন সংস্থার ৩৩০ জনকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পালিয়ে আসার ১২ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে কক্সবাজারের ইনানীতে নৌবাহিনীর জেটিঘাট থেকে তাদের মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি জানিয়েছে, মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর ওই সদস্যদের কক্সবাজারের টেকনাফ ও বান্দরবানের ঘুমধুমের দুটি স্কুলে রাখা হয়েছিল। হস্তান্তরের জন্য বৃহস্পতিবার সকালে ১২টি বাসে করে তাতের ইনানী উপকূলে নৌবাহিনীর জেটি ঘাট এলাকায় নিয়ে আসা আনা হয়।
তাদের নিয়ে যেতে মিয়ানমার নৌ বাহিনীর একটি জাহাজ বাংলাদেশের সীমানায় এসে গভীর সাগরে অবস্থান করছে। পালিয়ে আসা বিজিপি সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের পর্যটকবাহী জাহাজ কর্ণফুলীতে করে করে পৌঁছে দেওয়া হবে মিয়ানমারের ওই জাহাজে। সেখানেই হবে হস্তান্তর প্রক্রিয়া।
বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়নের সার্বিক তত্ত্বাবধানে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ইউ অং ক্যও মোয়েসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তাদের গ্রহণ করতে মিয়ানমারের বিজিপির সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সকালে উখিয়ার ইনানীতে নৌবাহিনীর জেটিঘাটে পৌঁছায়। এরপর তারা বিজিবির রামু সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল মেহেদী হোসাইন কবীরের নেতৃত্বে সাত সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসে। দুই দেশের এ প্রতিনিধিরা সকাল সাড়ে ১০টায় হস্তান্তর বিষয়ে বৈঠকে মিলিত হন।
বিজিবি জানায়, ওই ৩৩০ জনকে নিতে মিয়ানমারের একটি জাহাজ গভীর সমুদ্রে বাংলাদেশের জলসীমায় আসে। ইনানী জেটিঘাট থেকে তাদের কর্ণফুলী জাহাজে করে মিয়ানমারের ওই জাহাজে পৌঁছানো হবে।
মিয়ানমারে জান্তার অনুগত বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির চলমান সংঘর্ষে প্রাণ বাঁচাতে সেখান থেকে কয়েক দফায় পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন ৩৩০ জন। তাদের রাখা হয় টেকনাফের হ্নীলা হাইস্কুল ও ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে থেকে আজ সকালে তাদের বিজিবির কড়া নিরাপত্তায় ইনানী জেটিঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়।
আশ্রিত এই ৩৩০ জনের মধ্যে বিজিপির ৩০২ জন, বিজিপি সদস্যের পরিবারের চারজন, সেনাবাহিনীর দুজন, ইমিগ্রেশন বিভাগের ১৮ জন এবং বেসামরিক নাগরিক চারজন রয়েছেন।
আশ্রিতদের মধ্যে নয়জন অসুস্থ ছিলেন। তাদের মধ্যে পাঁচজন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কমেক) এবং চারজন চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে (চমেক) চিকিৎসা নিয়েছেন।