সমুদ্রের তেল, গ্যাস উত্তোলনে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলে, আমরা চাই, তেল, গ্যাসের সঠিক ব্যবহার। তাই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা উত্তোলনে বিনিয়োগ করতে পারেন। বিশাল সমুদ্রসীমার সম্পদ ব্যবহার করে দেশের মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতি করাই সরকারে লক্ষ্য।
বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘দ্য টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস অ্যান্ড মেরিটাইম জোন অ্যাক্ট-১৯৭৪’র সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, খনিজ সম্পদসহ সব আমাদের উত্তোলন করতে হবে। কাজে লাগাতে হবে। এজন্য যথাযথ বিনিয়োগও প্রয়োজন। এজন্য আলাপ আলোচনা করছি। আন্তর্জাতিক টেন্ডারও দিয়েছি।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আবারও আহবান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আপনারা আসুন। বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন। আমাদের ভৌগলিক অবস্থানের কারণেই বিনিয়োগ করে আপনারাও লাভবান হবেন।
তিনি বলেন, আজকে যে সেমিনার হচ্ছে এই সেমিনার সামুদ্রিক সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার, সমুদ্রকে নিরাপদ এবং কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে দেশের সমুদ্রকেন্দ্রিক সব সংস্থা থেকে সহযোগিতা এবং সহায়ক হতে ভূমিকা পালন করবে।
সমুদ্র এলাকার উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশাল সমুদ্র এলাকায় ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ চলছে। মাতারবাড়িতে ডিপ সি পোর্ট করেছি। পায়রা সি পোর্ট করছি। এটা থেকে সমুদ্র বেশি দূরে না। এটার একটা ভবিষ্যৎ আছে। আমরা ধীরে ধীরে উন্নতি করছি। তাড়াহুড়া করছি না। ব্লু ইকোনমি বাস্তবায়নে বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছি।
সমুদ্রসীমার অধিকার নিয়ে ১৯৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, শুধু সমুদ্রসীমা নয়, স্থলসীমা নিয়েও কেউ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। জাতির পিতা যেখানে রেখে গিয়েছিলেন সেখানেই পড়েছিল। ২১ বছর পর সরকারে এসে এ নিয়ে কাজ শুরু করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্থল সীমানার চুক্তি বঙ্গবন্ধু করে গিয়েছিলেন। ভারতের সঙ্গে চুক্তি করেন। সেই সঙ্গে সংবিধান সংশোধন করে চুক্তি বাস্তবায়ন করেন। পরে সেটা কার্যকর করা হয়নি। ২১ বছর পর আমরা যখন সরকারে আসি, এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ শুরু করি। তখন কাজগুলো খুব গোপনীয়তার সঙ্গে শুরু করতে হয়েছিল। আমাদের সমুদ্রসীমা যাতে নিশ্চিত হয় সেজন্য জাতিসংঘে আমরা সই করে আসি।
তিনি বলেন, ২০১২ এবং ২০১৪ সালে বাংলাদেশ-মিয়ানমার এবং ভারতের সাথে সমুদ্রসীমার নিষ্পত্তি করি। আজ বিশাল সমুদ্রসীমার অধিকার রয়েছে, আমরা সম্ভাবনাময় একটা বিশাল অর্থনৈতিক এলাকা পেয়েছি।
সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়; সরকার জাতির পিতার এ নীতি নিয়েই চলছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে যে বাণিজ্য চলে সেখানে যাতে কোনো দ্বন্দ্ব না হয়, শান্তিপূর্ণ বাণিজ্যপথ হিসেবেই যেন অব্যাহত থাকে। কারো সঙ্গে বাংলাদেশের শত্রুতা নেই।
শেষ শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান বিশ্বের অনেক জায়গায় যুদ্ধ, সংঘাত চলছে। বাংলাদেশ শান্তিতে বিশ্বাস করে, যুদ্ধে বিশ্বাস করে না। কারণ, শান্তিই প্রগতি দেখায়।